নষ্টা মেয়ে
পর্ব ১১+১২
নাম্বার টা ছোটো খালামনি নামে সেভ করা আছে।তার মানে ইনিই রিমনের ছোটো খালামনি।সজিবের আম্মু।
মিথিলার হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসছে।কি করবে ভেবে পাচ্ছে না।ফোন ধরাটা কি ঠিক হবে? যদি জানতে চায় কে তখন কি বলবো।
আমাকে কখনো দেখেনি ঠিকই কিন্তু নাম তো শুনেছে।যদি আরো কিছু জানতে চাই।তখন।তখন তো ধরা পড়ে যেতে হবে।
আবার অন্য কিছুও তো হতে পারে।সজিবের কিছু হয়ে যাইনি তো? সজিবের কিছু হয়ে গেলে সারাটা জিবন এই মিথ্যা কলঙ্ক বয়ে বেরাতে হবে।
কাপা কাপা হাতে মিথিলা ফোনটা রিসিভ করে,,,অ্যাসসালামু আলাইকুম
ওপাশ থেকে,,, অলাইকুম সালাম,,,,কে,,?
জি আমি মিথিলা।
ওহ তুমি মামনি?? আপার কাছে তোমার কথা জজেনেছি।তো কেমন আছো মামনি??
জি খালামনি ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?
এতো দিন ভালো ছিলাম না আজ অনেক ভালো আছি।আজ যে আমার সজিবের সেন্স ফিরে এসেছে।আমার ছেলেটা আজ আমাকে মা বলে ডেকেছে।কি যে খুশি লাগছে!! ওর প্রথম মা বলে ডাকা বুলিতেও এতো শান্তি পায়নি আজ যতটা শান্তি পেয়েছি।
এই দেখো আমি তো বক বক করেই যাচ্ছি তা রিমন কোথায়?? সজিবের জ্ঞান ফিরে এসেছে জানলে ওই সব চাইতে খুশি হবে।
জি খালামনি ও বাথরুমে।গোসল করছে এখনি বের হবে।
ঠিক আছে মা ও বের হলেই বলো আমাকে ফোন করতে।এখন রাখছি তোমার বড় খালামনিকেও জানাতে হবে।আল্লাহর ইচ্ছাই আমরা খুব শিঘ্রই দেশে আসছি।
জি ভালো থাকবেন খালামনি।আল্লাহ হাফেজ।
আল্লাহ যা করেন ভালোর জন্যই করেন ফোন ধরতে কতো ভয় পাচ্ছিলাম।খালামনিতো কিছুই বললেন না এক নামের তো কতো মানুষই আছে।
তবুও ভালো লাগছে সবিজ দেশে ফিরে আসা মানে রিমন তার ভুল বুঝতে পারবে।সজিবতো আর মিথ্যা বলবে না।আজকে নিজেকে অনেক খুশি লাগছে।যখন রিমন জানতে পারবে আমি কোনো অপরাধ করিনি তখনি ভালোবেসে বুকে টেনে নিবে।
রিমন বাথরুম থেকে বের হয়েছে মাথা মুছতে মুছতেই জিজ্ঞাস করলো।কিরে এখনো দাড়িয়ে আছিস কেন?
আমিতো তোমার জন্য অপেক্ষা করছি আমরা আজ সবাই এক সাথে খাবার খাবো।
যদি এটা ভেবে থাকিস আমি তোকে মেনে নিচ্ছি তো সেটা তোর জিবনের সব চাইতে বড় ভুল।পৃথিবী উল্টে গেলেও আমি তোকে স্ত্রী বলে মানবো না।আর কি বললি আমরা এক সাথে খাবো? তোর মতো নষ্টা মেয়ের সাথে বসতেও ঘৃণা করে খাবার খাওয়া তো দূরের কথা।
বলাতো যায় না তোর ওই পাপের শরীর কতো জনকে খুশিতে ব্যস্ত ছিলো।
রিমন এসে এমন কথা শুনাবে মিথিলা বুঝতেই পারেনি।শুধু তো এক সাথে খেতে চেয়েছে স্বামির অধিকারতো চাইনি তাতেও কথা শুনতে হলো।ভালো বাসার মানুষেরর সামান্য আঘাতো কলিজা ছিদ্র করে দেয়।আর রিমন তো কলিজাতেই আঘাত করছে।
ছোটো খালামনি ফোন করেছিলো বলেই ওয়াস রুমে চলে গেলো।হয়তো এখন মনের সুখে কান্না করবে।রিমনের সামনে কান্না করলে আবারো শুনতে হবে নষ্টা মেয়ের কান্নাটাও ওর সহ্য হচ্ছে না।
রিমন সাথে সাথে ছোটো খালামনিকে ফোন করলো।কথা বলার ভঙ্গিতে বোঝা যাচ্ছে বেশ খুশি হয়েছে।
কথা শেষ করেই রিমন বেরিয়ে পড়লো।মিথিলাও রিমনের পিছু পিছু চলে গেল।রিমন না ডাকুক তবুও আব্বু আম্মুকে বোঝাতে হবে আমরা এক সাথেই নেমেছি।
মিথিলা সবাইকে খাবার বেড়ে দিচ্ছে আব্বু আম্মু বেশ জোরাজুরি করছে এক সাথে বসে খেতে।মিথিলার ও ইচ্ছা করছে কিন্তু রিমনের ভয়ে বসতে পারছে না।
কিন্তু আব্বু না বসিয়ে শুনলো না বসতেই হলো।সকলে নিরবে খেয়ে যাচ্ছি।
আম্মু:আচ্চা রিমন তুই কেমন বল তো ঘরে নতুন বউ রেখে বাইরে বাইরে থাকছিস।মেয়েটা সারাক্ষন তোর অপেক্ষায় বসে থাকে,,আর তুই!!কাল তোর শ্বশুড় বাড়ি থেকে ঘুরে আসিস।
রিমন:আম্মু আমার কাজ আছে।যেতে ইচ্ছা হলে ও একাই যাক যত দিন ইচ্ছা থেকে আসুক।আমি যেতে পারবো না।
আব্বু:রিমন তুই কিন্তু দিন দিন বেয়াদব হয়ে যাচ্ছিস।তোর কমন সেন্স বলতে কিছুই নেই? নতুন বউ একা বাবার বাড়িতে যাবে লোকে দেখলে কি বলবে।
রিমন:কিন্তু বাবা কাল তো আমার কাজ আছে।
আব্বু:ওটা অন্য কাউকে দিয়ে করিয়ে নেবো।কালই মিথিলাকে নিয়ে ঘুরে আসবি।আমি আর কোনো কথা শুনতে চাই না।
বাবার মুখের ওপর কথার বলার সাধ্য নেই।তাই চুপচাপ খেয়ে উঠে পড়লো।মিথিলারো খাওয়া শেষ।
খাওয়া শেষে সকলে বসেছে টিভি দেখতে।কিন্তু মিথিলাকে পাশে নিয়ে টিভি দেখতে একদমই সহ্য হচ্ছে না।তার উপর কাল নাকি ওদের বাসাই যেতে হবে।মাথাটা ব্যাথা করছে বলে উঠে এলো।মিথিলাও আব্বু আম্মুর পারমিশন নিয়ে রুমে চলে আসলো।
মিথিলা:এক গ্লাস পানি আর ঔষধটা নিয়ে রিমনকে বললো খেয়ে নিতে।
রিমন গ্লাসটা ছুড়ে দিয়েই মিথিলার গলা চেপে ধরলো।মিথিলাকে দেওয়ালের সাথে চেপে রাখলো।মিথিলা নিশ্বাস নিতে পরছে না ছটপট করছে।
মিথিলার ছটপট করতে দেখেও ছাড়ছে না।রিমনের সাথে শক্তিতেও পেরে উঠছে না।মুখ দিয়ে শুধু গোঙানোর আওয়াজ টুকুই বের হচ্ছে।
কিন্তু এমন ভাবে ধরে রাখলে মারা যাবে তাই পরক্ষনে ছেড়ে দিলো।মিথিলার চোখ মুখ লাল হয়ে গেছে।অনেকক্ষন নিশ্বাস নিতে না পেরে হার্ডবিট দুরতো চলছে।দেওয়াল ঘেসে বসে পড়লো।মনে হলো মৃত্যুর যন্ত্রনা পেয়েছে।
কিন্তু রিমনের সামান্যতম অনুভুতি নেই।উল্টো আরো শাষাতে লাগলো।
বেহায়া মেয়ে আব্বু যখন বলছিলো তোকে বাবার বাড়িতে নিয়ে যেতে না করলি না কেন? কেন তুই একা যেতে পারিস না।বিয়ের আগেতো ঠিকই যেতে পারতি এখন কি হয়েছে? দেখ এখন কেমন লাগে? স্বামিকে নিয়ে ঘুরতে মন চাইছে না তোর? দেখ তোর হাল কি করি।
এই বলে মিথিলার চুল ধরে আরো মারতে গেলো কিন্তু ফুফিয়ে কান্না করতে দেখে ছেড়ে দিলো।এখন আর কিছু বলাটা ঠিক হবে না একটু একটু করে শাস্তি ভোগ করতে হবে।
কান্না করতে করতে চোখের জলটাও শুকিয়ে গেছে কিন্তু এখনো সেখান থেকে উঠতে ইচ্ছা করছে না।উঠার শক্তিটুকু ও হারিয়ে গেছে।কিন্তু ফোনটা বেজেই চলেছে।আম্মু ফোন করছে দেখে রিসিভ করলো না।এখন কথা বলতে ইচ্ছা করছে না।
কিছুক্ষন বাদেই শ্বাশুড়ি আম্মু এসে জানালো আব্বু নাকি বাথরুমে পড়ে গিয়ে পা টা মচকে গেছে।তাই হয়তো এতো বার ফোন করছিলো।ধরছি না দেখে শ্বাশুড়ি আম্মুর কাছে বলেছে।
শ্বশুর আব্বু জানালো কালকের অপেক্ষায় না থেকে এখনি বেরিয়ে পড়তে।জামাই মেয়েকে পাশে পেলে ভালো লাগবে।
বাবা পড়ে পা মচকে গেছে শুনেই মিথিলার মন কেমন করছে।কিন্তু রিমনকে সাথে যেতে বলছে দেখে ভয় করছে।শ্বশুর আব্বু সামনে তো কিছু বলছে না কিন্তু পরে তো আর শ্বশুর আব্বু থাকবে না।তখন কি হবে?
রিমন তার বাবার কথা রাখতেই দ্রুত গুছিয়ে নিলো এমন ভাব করছে যেন ও যেতে অনেক আগ্রহী।মিথিলাও দ্রুত তৈরী হয়ে নিলো।আব্বু আম্মুকে সালাম করে দুজনই বেরিয়ে পড়লো,,,,,,,
নষ্টা মেয়ে
পর্ব ১২
.
.
আব্বু আম্মুকে সালাম করে বেরিয়ে পড়লো।রিমনের বাইকে করেই রওনা দিলো।
সন্ধ্যা বেলা রাস্তায় অনেক ভিড় থাকে তাই বাইটা নিয়েই বের হতে হলো।জ্যাম হলে অন্য পাশ দিয়ে ঘুরে যাওয়া যাবে।
অনেক দিন বাদে রিমনের বাইকে উঠেছে মিথিলা।তবে যতদুর সম্ভব ফাঁকা রেখেই বসেছে।কেউ দেখলে বলবেই না ওরা স্বামি স্ত্রী।
অন্য দিন হলে রিমনের পিঠে বুক ঠেকিয়ে চেপে বসতো তবে সেই সাহস আজ আর নেই।কিছুক্ষন আগেও তো গায়ে হাত তুলেছে শুধু এবাড়িতে আসতে হবে জেনে। সেখানে জড়িয়ে ধরলে বাইক থেকেই না জানি ফেলে দেয়।তাই আর জড়িয়ে ধরে বসা হলো না।
কেউ কারো সাথে কথা বলছে না।বাইকের স্পিড টা কমিয়ে চৌরাস্তা থেকে বেশ কিছু মিষ্টি আর ফল নিয়ে নিলো।বাচ্চা তো কেউ নেই তাই হয়তো চিপ্স নেই নি।
তবুও দোকানে দাড়িয়ে বলছিলো আর কিছু নিতে হবে কি না।সবার সামনে এমন ভাবে কথা বলছিলো যে আমাকে কত ভালোবাসে।আমার ভালো লাগা মন্দ লাগায় কত কেয়ার করে।
তবে এটুকু মানতে হবে আর জাই করুক মানুষের সামন্যে বড় কথা বলছে না।সাধারন জ্ঞান টুকু অন্তত আছে।
আব্বু আম্মু সামনে এমন থাকলে আর কোনো চিন্তা থাকলো না।
পৌছাতে পৌছাতে রাত হয়ে গেছে।ফোন করে দিয়েছি আমরা আসছি তাই গেটেই মালিহা দাড়িয়ে আছে।বোন আর নতুন দোলা ভাইকে বরন করে নিচ্ছে।
শুনেছি মানুষ শ্বশুর বাড়ি আসলে অনেক খুশি হয় কিন্তু রিমনকে দেখে বোঝাই যাচ্ছে ও একটুও খুশি হয়নি।মালিহা এতো কিছু বললো কিন্তু ও একটা সামাজিক হাসি হেসেই হা না তে কথা বলছে।
মালিহাও বিষয়টা বুঝতে পেরে চুপ করে গেলো।ভেতরে ডুকেই বুঝা যাচ্ছে জামাই আদরের প্রতিযোগিতা চলছে।সারা বাড়ি খাবারে গন্ধে ম ম করছে।বাবা চেয়ার টাতে বসে আছে।বাবাকে দেখেই বুকের ভেতরটা হু হু করে উঠলো।অন্যদিন হলে বাবাই আগে এসে জড়িয়ে ধরতো কিন্তু আজ বসেই আছে।
পায়ে বেশ লম্বা করে ব্যান্ডেজ বাধা।গিয়েই বাবাকে জড়িয়ে ধরতে চোখে পানি চলে আসলো।আমাদের উপস্হিতি টের পেয়ে আম্মুও রান্না থামিয়ে চলে এসেছে।
রিমন:এতোক্ষন বাবা মেয়ের কান্নাকাটিতে নাজেহাল এবার মাও যোগ দিয়েছে।যত সব নাটক(মনে মনে)
আমার দিকে যেন কারো খেয়ালই নেই।শুধু মেয়ে আর মেয়ে।
কান্নাকাটি থামিয়ে কেমন আছো বাবা।(মিথিলার আম্মু)
জি আন্টি ভালো আছি। আপনি কেমন আছেন?
আন্টি কেন বলছো বাবা আমিতো তোমার আম্মু।মিথিলার আম্মু মানেই তো তোমার আম্মু।
মিথিলা রিমনকে নিয়ে তোর রুমে যা।অনেকটা পথ এসেছিস একটু রেস্ট নে।যাও বাবা তোমরা রুমে যাও।
রিমন:ওকে আম্মু।
মিথিলা আর রিমনের সাথে সাথে মালিহাও চলে গেল।রুমের বাইরে থেকেই হাসনাহেনা আর রজনীগন্ধা ফুলের সুভাস আসছে।রুমটা অনেক সুন্দর করে সাজানো।
মালিহা বরাবরই একটু বেশি সাজগুজে।মিথিলার মতো মালিহা যে কোনো সুন্দরীকে হার মানাতে পারে।তবে মিথিলা মালিহার মতো হয়তো এতো সুন্দর করে ঘর সাজাতে পারবে না।তাই তো মিথিলা ঘুরে ঘুরে দেখছে।
মালিহা:শুধু দেখলে হবে না এটা সাজাতে এক হাজার টাকার ফুল কিনেছি আর আমার পারিশ্রমিক দুই হাজার।তাহলে টুটাল তিন হাজার টাকা লাগবে না হলে এই সুন্দর খাটে ঘোমানোর আশা বাদ।
মিথিলা:এই তুই যাতো তোকে কোনো টাকা দিতে পারবো না।এতো টাকা দিয়ে কি করবি।
কি বলিস আপু তুই জানিস বাবা কলেজে যাওয়ার সময় কতো কম কম টাকা দেয়।সেই টাকা থেকে বাচিয়ে এতো সুন্দর একটা পরিবেস করে দিলাম।টাকা ছাড়া এক পাও নড়বো না আমি।
দেখ মালিহা অনেক টায়ার্ড লাগছে যা তো।পরে কথা বলিস।
আচ্ছা আপু আমি টাকা চাইছি দুলাভাইয়ের কাছে তুই মানা করছিস কেন?
তোর দোলা,,,,,,মিথিলাকে থামিয়ে দিয়ে।
রিমন:আচ্ছা ঠিক আছে একটা মাত্র শালিকা আমার একটা আবদার করেছে না দিয়ে পারি কি করে।শালি মানে আধা ঘরবালি।এই নাও পুরা তিন হাজার।
মালিহাও টাকা পেয়ে দিলো দৌড়।দুলাভাই কিছু লাগলে বলেন আধা ঘরবালি সবসময় রেডি।
রিমনের এমন পরিবর্তন দেখে মিথিলা ভিমড়ি খেয়ে যাচ্ছে।যে কিনা এবাড়িতে আসার কথা শুনে কতো কান্ড করলো সেই রিমন সবার সাথে এতো সুন্দর আচারন করছে।
মিথিলা বেশ খুশি হচ্ছে তাহলে কি রিমন আমাকে মেনে নিতে শুরু করেছে?ফ্রেস হয়ে গোছাতে নয়টা বেজে গেছে মালিহা খাওয়ার জন্য ডাকাডাকি করছে।
রিমন:বাহ আমার যেসব রান্না পছন্দ সবই রান্না হয়েছে মিথিলা হয়তো আম্মুর কাছ থেকে শুনে বলে দিয়েছে।খেতে খেতে অনেক খেয়ে ফেলেছি তবুও জামাই আদর শেষ হচ্ছে না।দিতেই আছে।আর খেলে পেট ফেটে যাবে।কিন্তু বলতেও পারছি না। এখানে কাছের মানুষ বলতে তো মিথিলা তাই ওর কানের কাছে মুখ নিয়ে বলে দিলো আর খেতে পারছি না।
রিমন এতো ভালোভাবে কথা বলছে দেখে মিথিলার অবাক হওয়ার শিমা নেই।রিমনের পরিবর্তনে রিতি মতো মুগ্ধ।একে বারে বাঙালি স্বামি স্ত্রীর মতো চুপিসারে কথা বলছে।
খেয়ে দেয়ে রিমন মালিহার সাথে আড্ডা দিচ্ছে।অবশ্য সেখানে মালিহা একা না আরো দুইটা ফুফাতো বোন আছে।পাশেই বাড়ি অনেক রাত হলেও যেতে পারবে।
রিমন সকলের সাথে মজা করছে আর মিথিলা ভাবছে আর কি কি করলে রিমন তার প্রতি দুর্বল হবে।তবে মিথিলার সুন্দর্যে রিমন প্রতি বারই দূর্বল হয়ে পড়ে কিন্তু শেষে কি হয় জানি না।রেগে গিয়ে গায়ে হাত তোলে।
তবে আজ মনে হচ্ছে কিছু বলবে না।আজ রিমন কে অনেক খুশি লাগছে।এমনিতে বিয়েতে সাজানো বাসরঘর জোটেনি তবে আজ মালিহার সাজানো ঘরটাকেই বাসরঘর মনে হচ্ছে।
শ্বশুর বাড়িতে বাসরঘর হয়নিতো কি হয়েছে বাবার বাড়িই না হয় বাসর হবে ভেবে মিথিলার মনে মনে হাসি পায়।
তবে আজ শুধু চোখের কাজল আর ঠোঁট দিয়ে না পুরো শরীর দিয়ে ঘায়েল করতে হবে।আজ রিমনের ছুয়া নয় নিজেই রিমনকে ছুয়ে দিবো।শুনেছি বাসর রাতে নতুন বউ স্বামিকে সরবত খাওয়ায়।সরবতে কি থাকে জানি না তবে আমার সরবতে পাহাড় সমান ভালোবাসা আছে।ভালোবাসার ছোয়া আছে।
সকলের সাথে মজা মাস্তি খোস গল্প শেষ করে রিমন রুমে চলে আসলো।মালিহার বেশ বুদ্ধি আছে।বুদ্ধি করে উপর তলার কর্ণারের ঘরটা সাজিয়েছে।যাতে কেউ তাদের রোম্যান্সের শাক্খি না থাকে।একেবারেই নব দম্পতী দের স্বর্গ খানা।
রিমন ভেতরে ডুকে দরজাটা ভেজে দিলো।রিমনের উপস্হিতি বুঝতে পেরে মিথিলা সরবতটা হাতে নিলো।রিমন দেখেও না দেখার ভান ধরে সার্টটা খুলে শোয়ার পস্তুতি নিচ্ছে।
মিথিলাও জানে যে এমন ভাবে খাওয়ানো যাবে না তাই বললো তোমার তো বেশি খাওয়া পড়েছে এই সরবতটা খেলে ভালো লাগবে।পেট ভার হবে না।
রিমনও বিষয়টা জাচাই না করেই খেয়ে নিলো।এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা।
এতো সময় মিথিলা নিজেকে ওরনা দিয়ে ডেকে রেখেছিলো এবার ওরনাটাকে ছুড়ে ফেলে দিলো।
চিকন সুতার জর্জেট শাড়িতে কোমরটা অনেক প্যাচ দেওয়া থাকলেও বুকের ওপর দিয়ে আচলটাই ফেলে রেখেছে।
ভালোভাবে নাভিটা দেখা যাচ্ছে।বেগি হাতে ব্রাউজ ঠোঁট সাজানো,,চোখে কাজল,,গায়ে পারফিউম।ব্লাউজ পিঠের দিকে জাল বুনন করা।
রিমন বার বার মিথিলার নাভি আর কোমরে চোখ বুলিয়ে যাচ্ছে কিন্তু নিজেকে ধরে রাখার চেষ্টা করছে।
মিথিলাও বিষয়টা বুঝতে পেরে নিজে আরো এগিয়ে নিয়ে রিমনের হাত ধরে কোমর স্পর্শ করিয়ে দিলো।নাকে নাকে ঘেশে দিলো।ঠোঁট দিয়ে ঠোঁটের আশেপাশে স্পর্শ দিয়ে দিলো।
রিমনের মতো জোয়ান ছেলে এমন একটা যুবতি মেয়ের স্পর্শ পেয়ে নিজেকে ধরে রাখতে না পারাই স্বাভাবিক।রিমনও নিজেকে ধরে রাখতে পাললো না।
মিথিলাকে আড় কোল করে বিছানাই শুইয়ে দিলো।মিথিলার রক্ত জবার মতো ঠোঁটটা বেশ করে কামড়ে দিলো।মিথিলাও কমে যাইনি।দুজনই শরীরের ঘ্রানটা আশটে পিশটে নিয়েছে।ডিম লাইটের আলোয় দুজন যেন সুখের ভেলা ভাসিয়েছে।
মাঝ রাতে মিথিলা নিজের নগ্ন দেহটা আবিষ্কার করলো।তবে আজ একটুও খারাপ লাগছে না।নিজেকে কাপড়ে না মুড়িয়ে ওই ভাবেই রিমনকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে গেলো।এমনি সময় তো জড়িয়ে ধরলে রক্ষে থাকবে না তাই রাতেই পুশিয়ে নিলো।
তবে সকালে মিথিলার আগেই রিমনের ঘুম ভেঙে গেল।মিথিলা এখনো জড়িয়ে ধরে আছে।কাপড় বলতে গায়ের কাঁথাটা।ওটা সরালেই লজ্জা করবে।
ঘুমন্ত মিথিলাকে একে বারে মায়াপরি লাগছে।কিছুটা চুল মুখে ভিড় করেছে।তাইতো কব্য প্রেমিরা ঘুমন্ত নারীদের নিয়ে কত শত লেখা লিখেছেন।
রিমন একটা ঠুংকো হাসি হেসে মিথিলাকে দূরে ঠেলে দিলো।হয়তো মনে মনে বলছে কাল তোর সূন্দর্য দেখে কামুক হয়েছি তবে স্বামি হয়নি।তোর শরীর ছুয়ে দেখেছি মন স্পর্শ করিনি।
বিছানার পাশে রাখা কাপড়টা পরে বাথরুমে চলে গেলো।গোসল করে ফ্রেস হয়ে বেরিয়ে এলো।
মিথিলারো ঘুম ভেঙে গেছে উঠে রিমনকে শুভ সকাল বলে উইস করলো কিন্তু উত্তরের অপেক্ষা না করে ফ্রেস হতে চলে গেলো।হয়তো উত্তর পাবে না জেনেই চলেগেছে।
মালিহা চা দিয়ে গেছে অনেক আগেই।মিথিলাকে বাইরে বেরোতে দেখেই বলে দিলো আর কখনো আমার সামনে সেজে আসবি না।কখনো শাড়ি পরবি না।
মিথিলা:কেন? নতুন করে প্রমে পড়ে যাওয়ার ভয়ে নাকি?
তোকে তো কোনো কালেই ভালো বাসিনি নতুন করে ভালোবাসার কি আছে।
তাহলে আমাকে না দেখে থাকতে পারতে না কেন? একদিন কথা না বললেই তো রাতের ঘুম হারাম হয়ে যেত।নানান বাহানায় মানিয়ে নিতে।
ওসব কিছুই ছিলো না।সবই অভিনয় ছিলো।তোর থেকে প্রতিশোধ নেওয়ার ছিলো তাই আগে তোকে জালে ফাসানোর জন্য শুধুই অভিনয় ছিলো।
ভেবেছিলাম তোকে ভালোবাসার জারে ফাসিয়ে তোর দেহটাকে ভোগ করবো তার পর সমাজে তোকে নষ্টা মেয়ের পরিচয় দেব।তুই জ্বলে পুড়ে মরবি এদিকে আমার প্রতিশোধ নেওয়া হবে।
আফসোস সবই হয়েছে কিন্তু তোকে সমাজে নষ্টা বলে জানাতে পারলাম না কিন্তু শাস্তি পেতে থাকবি।
মিথিলা এতো দিন ভাবতো রিমন ওকে ভালোবেসেছে কিন্তু প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ভালোবাসাকে বলি দিচ্ছে।
কিন্তু রিমন আজ কি বলছে।আমাকে শুধুই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য ভালো বেসেছে।এতোদিনের ভাবনা ভুল ছিলো।তাহলে কি,,,,,,,,,
.
.
চলবে,,,,,,,,,

0 মন্তব্যসমূহ
গল্প গুলো কেমন লাগলো, আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করুন।