নষ্টা মেয়ে। পর্ব ৯+১০


নষ্টা মেয়ে

পর্ব ৯+১০

বাড়ি ভর্তি আত্মীয়স্বজন।রিমনের বিয়ের কথা শুনেই সবাই ছুটে এসেছে।মামা,মামানি,নানু, বড় খালামনি আরো অনেকে।
বড় খালামনিকে সালাম করতেই হাতে হাজার টাকার নোটটা ধরিয়ে দিলো।বাহ বেশ অদ্ভুদ ব্যাপার বড় খালামনি সারাজীবন সুখী হওয়ার দোয়া করে দিচ্ছে আর অন্য দিকে তারই ছোট বোন অভিশাপ দিচ্ছে তিলে তিলে শেষ হওয়ার।পৃথিবীতে কত যে বিচিত্র মনের মানুষ আছে বোঝায় দায়।হয়তো রিমনের বলা কথাগুলি বড় খালামনি শুনতেন তিনিও অভিশাপ দিয়ে যেতেন।ভাগ্যিস শুনেন নি।
মামা মামানি সবাই নানান ভাবে নতুন বউ দেখছে সকলেই রূপের প্রশংসা করে যাচ্ছে।রিমনের সাথে নাকি বেশ মানিয়েছে।কিন্তু পোড়া কপাল আমার,, রিমন আমাকে মানিয়ে নিতে পারলো না।
নানু বেশ রশিক মানুষ এই সময় টুকুর মধ্যেই সব কষ্ট ভুলিয়ে দিয়েছে।হবে না কেন তার হাসি রসত্বক কথা না হাসতে চাইলেও হাসি চলে আসছে।
সকলে দোয়া করলো জীবনে সুখী হওয়ার,, সকলের সাথে মানিয়ে চলার আর নানু ঘাড়ের কাছে মুখ নিয়ে নাত বউ আগামি বছরেই তিন হওয়ার দোয়া দিলেন।
আমিও নানুর কাছে মুখ নিয়ে বলে দিলাম ম্যাচ অলরেডি শুরু করে দিয়েছি এখন উইকেট পড়ার অপেক্ষা।নানু যেমন রসিক আমি কি কম নাকি।
সকলের পেয়ে বাড়ির কথা মনেই পড়ছে না।বরংছো বাড়ির চাইতে শ্বশুর বাড়িটা বেশি ভালো লাগছে।সকলে কেমন আপন করে নিয়েছে।মনে হচ্ছে সকলের সাথে কতো আগেকার পরিচয়।
কথাই কথাই সকলে রিমনকে খোজ করছে।নতুন বউ পাশে নতুন বর না থাকলে ভালো দেখায় না।সকলে এসে আমার কাছেই জিজ্ঞাস করছে রিমন কোথায়। কাউকে বলতেও পারছি না আমার সাথেই রাগ করে বেরিয়ে পড়েছে।বাসর রাতের পরের দিনই স্বামি স্ত্রী ঝগড়া করাটা মোটেও ভালো দেখায় না।
কিন্তু বার বার জিজ্ঞাস করছে কিছু না বললেও খারাপ ভাববে।কিছুতো বলতে হবে।
আমাকে বিচলিত দেখেই শ্বাশুড়ি আম্মু বলে দিলো রিমনকে একটা কাজে পাঠিয়েছে কিছুক্ষন বাদেই ফিরে আসবে।
যাক বাবা বাচা গেল ভেবেই পাচ্ছিলাম না কি বলবো।শ্বাশুড়ি আম্মু থ্যাংকস (মনে মনে)।
সকলে এক সাথে লান্চ করবে।নানুর আবদার নতুন বউয়ের রান্না খাবে।বয়স হয়েছে কখন কি হয় বলা যায় না তাই আজই নাত বউয়ের রান্না খেয়ে যাবে।
রান্নার কথা শুনে বেশ ভয় পাচ্ছলাম কারন বাসাই কখনো তেমন রান্না করিনি।আম্মু রান্না করতেই দেইনি।দুই এক জনের রান্না হলে ওতোটা ভয় লাগতো না কিন্তু বাড়ি ভর্তি সকলের রান্না।
শ্বাশুড়ি আম্মু আস্বস্ত করলেন ইনি রান্নাই সাথে থাকবেন।যাক আর যাই হোক শ্বশুড়ি আম্মু মায়ের কোনো অংশে কম যায় না।নিজের মেয়ের মতই বোঝে।
রান্না করতে বেশি বেগ পেতে হয়নি।সব কিছুই আম্মু করেছেন আমি শুধু তার বলা অনুসরন করেছি।বেশ সুন্দর ঘ্রাণ বের হচ্ছে।এখন দেখতে হবে সকলে কি বলে।
সকলে খেতে বসেছে তবে রিমন এখনো ফিরেনি নানু অভিজ্ঞ মানুষ কিছুটা হয়তো আচ করেছে।কিন্তু সকলের সামনে কিছু বললেন না।
আম্মু খাবার বেড়ে দিচ্ছে সকলের সাথে আমাকেও বসালো।রান্নার বেশ প্রশংসা করলো।অনেক ভালো রান্না হয়েছে।
যাক এতোক্ষন ভয়ে ছিলাম কি বলে কি না বলে।মহিলারা নতুন বউয়ের দোষ না ধরলে নাকি শান্তি পায় না কিন্তু আমার বেলায় কথা ভিন্ন।
খাবার খেয়ে সকলে রিমনের অপেক্ষায় ছিলো কিন্তু দেরি হচ্ছে দেখে যেতে চাইলো।সবাইকে বেরিয়ে যেতে বলে,, নানুর নাকি আমার সাথে কথা আছে।
সকলে বাইরে চলে গেলে নানু বলতে লাগলো নানু ভাই শোন তোকে একটা কথা বলি,,, ছেলেরা ভ্রমরের মতো যেই ফুলে বেশি আকৃষ্ট হবে সেখানে বসবে।আর মেয়েরা পৃথিবির সব চাইতে সুন্দর ফুল চাইলেই যে কাউকে আকৃষ্ট করতে পারে।
নিজের কাছে ধরে রাখতে পারে।মেয়েদের অনেক ধৈর্যশীল হতে হয়।কোনো কিছুতেই ভাংলে চলবে না।মনকে কখনো কখনো ফুলের মতো কোমল আবার কখনো পাথরের মতো শক্ত করতে হয়।অল্পতে ধৈর্য হারতে নেই।সবুর করতে হয় কথায় আছে না সবুরে মেওয়া ফলে।আর আমি জানি তুই পারবি নানু ভাই।এক সময় তুই অনেক সুখি হবি।দুঃখ তোকে আচও করতে পারবে না।চিরো সুখী হ নানু ভাই।
আজ তাহলে আসি কোনে অসুবিধা হলে আমাকে বলিস। লজ্জা করবি না।আর স্বামিকে বসে আনা শেখ।ইহ কালে স্বামির সুখের চাইতে পরম পাওয় আর কিছুই নেই।ভালো থাকিস।যাই রে।
সকলে আগে থেকে গাড়িতে বসে আছে নানু উঠা মাত্রই স্টার্ট করলো।সকলকে বিদায় জানিয়ে ভেতরে চলে আসলা।
আম্মু আব্বুকে বলে রুমে চলে গেলাম।রিমনের খারাপ ব্যবহারের পরও অনেক ভালো লাগছে।নানুর কথা গুলি সত্যই মনে আচড় কাটার মতো।প্রত্যেক নারীর ভেতরেই স্বামিকে বসে আনার নিদারুন শক্তি আছে।মনকে শক্ত করে রাখতে হবে ভাংলে চলবে না।
এতো সহজে হার মানলে হবে না।ভালোবেসে নাকি পাথরেও ফুল ফোটানো যায় সেখানে রিমনকে নিজের করে নেওয়া যাবে না কেন।ওর মন থেকে ঘৃণা সরিয়ে ভালোবাসার বীজ বপন করতেই হবে।তার জন্য নিজের যা করতে হয় করবো।তবুও হার মেনে নিবো না।
ও আমাকে কষ্ট দিতে দিতে ক্লান্ত হলেও ওকে ভালোবাসা শেখাতে ক্লান্ত হলে চলবে না।আজই শপথ নিলাম আমার স্বামির ভালোবাসা জয় করবোই।দেখিয়ে দিবো মিথ্যার চাইতেও ভালোবাসার শক্তি অনেক বেশি।
কাল থেকে একবার ও আম্মুর সাথে কথা হয়নি আব্বুও হয়তো অনেক কষ্ট পাচ্ছে।একবার কথা বলে নেই আর আম্মুর সাথে কথা বললে অনেক সাহস পায়।ফোনটা অন করেই আম্মুকে কল করলাম।
হ্যালো আম্মু!! কেমন আছো?
আম্মু:আমাদের কথা ছাড় তুই কেমন আছিস?
মিথিলা:আমিতো অনেক ভালো আছি আম্মু মিথ্যা হাসির অভিনয় করে।
আম্মু:সত্যই বলছিস? রিমন তোকে মেনে নিয়েছে?
মিথিলা:হ্যা আম্মু মেনে নিয়েছে।(মিথ্যা না বললে আম্মু আব্বু কষ্ট পাবে তাই বললাম)
রিমন মেনে নিয়েছে শুনে আম্মুও খুশি হয়েছে।আব্বুর সাথেও অনেক কথা হলো।
আব্বু আম্মু আবার শ্বশুর শ্বাশুড়ির সাথে কথা বলবে তাই নিচে নেমে ফোনটা দিলাম।বেস অনেক্ষন কথা বলেছে।সকলকে বেশ খুশি দেখাচ্ছে।
যাই হোক সকলের এই হাসি খুশি রাখতে হলেও আমাকে রিমনের ভুল ভাঙাতে হবে।
কথা বলা শেষে রিমনের অপেক্ষায় বসে আছি।বসে থাকতে থাকতে বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা,, সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হয়ে এলো কিন্তু রিমনের আসার নাম নেই।
হয়তো বাসাই আসলেই একটা নষ্টা মেয়ের মুখ দেখতে হবে তাই আসছে না।
রাত বারটা বেজে গেছে তাতেও আসার নাম নেই দেখি,, এবার তো রিতিমতো অনেক ভয় করছে রাগের বসে অন্যকিছু করে বসলো না তো।
আল্লাহর কাছে হাত তুলে রিমনকে ভালো ভাবে ফিরে আসার প্রার্থনা করলাম।
শেষ রাতে তিনটার সময় বাইরে গাড়ি থামানোর আওয়াজ পেয়েই দৌড়ে গেটের কাছে চলে গেলাম।
গেট খুলে দিতেই ধাক্কা দিয়ে ভেতরে ডুকে পড়লো।গেট লক করে রিমনের পিছু পিছু আসতেই মনে পড়লো সারাদিন হয়তো কিছু খাইনি খাবার টা রুমে নিয়ে যায়।
খাবার নিয়ে রুমে যেতেই দেখি বিছানায় আড় হয়ে শুয়ে আছে।
ডাকতেও ভয় করছে সকালে ডাকাতে যেই কান্ড ঘটিয়েছে।তাইলে কি করা যায় ভাবতেই রিমনের ফোনটা চোখে পড়লো।
ফোনটা নিয়ে এক মিনিট পর পর বেশ কয়েকবার এলার্ম সেট করে দিলাম।
ডাকতেও হবে না আবার ঘুমও ভেঙে যাবে।যাকে বলে এক ডিলে দুই পাখি মারা।,,,,,,,,
.
.
চলবে,,,,,,

নষ্টা মেয়ে

পর্ব ১০
.
.
ফোনটা নিয়ে এক মিনিট পর পর বেশ কয়েক বার এলার্ম সেট করে দিলাম।
ডাকতেও হবে না ঘুমো ভেঙে যাবে।যাকে বলে এক ডিলে দুই পাখি মারা।
বাহ বুদ্ধিতে কাজ হয়েছে পতি দেব আমার নড়ে চড়ে উঠেছে।চোখ খুলেছে।
মিথিলা:তোমার জন্য খাবার এনেছি।খেয়ে নাও।
রিমন:তোর তো দেখি ডানা গজিয়েছে।তোর খেতে ইচ্ছা হলে তুই খা আমাকে সাধছিস কেন?
সারাদিন বাসাই ফেরোনি হয়তো কিছুই খাওয়নি।আচ্চা খারাপ মেয়েতো আমি আমি অন্য রুমে চলে যাচ্ছি।আমার সামনে খেতে হবে না।খাবার টেবিলে রেখে দিয়েছি।এই বলে মিথিলা বেরিয়ে পড়লো।
সত্যিই তো সারাদিন শুধু সিগারেট ছাড়া কিছুই খাওয়া হয়নি।খুব খিদে পেয়েছে।খাবারের উপর রাগ করে কি লাভ?
খাবার টা তো বাবার টাকায় কেনা।এই ভেবে রিমন খাবার টা খেয়ে নিলো।
এই মেয়েটাও না খাবার দিয়েছে কিন্তু খেয়ে হাত টা মোছার জন্য একটা তোয়ালে দেইনি।হাতটা কোথায় মুছবো?
রিমন:মিথিলা বলে ডাকতেই তাড়াহুড়া করে রুমে চলে আসলো।
মিথিলাতো দরজার পাশেই দাড়িয়ে ছিলো কিছু প্রয়োজন পড়লে সাথে সাথে দিতে পারবে।
মিথিলা:বলো!! কিছু লাগবে?
খাবার দিয়েছিস হাতটা কোথায় মুছবো।তোয়ালে কোথায়?
ওহ হ্যা তোয়ালে আনতে ভুলে গেছি এই না আমার শাড়ির আচলেই হাতটা মুছো।আচলটা এগিয়ে দিয়ে।
মিথিলার এমন বাঙালি বউয়ের মতো নেকামি করতে দেখে রাগটা মাথায় উঠে গেলো।কিন্তু সবে মাত্র খেয়ে উঠেছে তাই রাগটা চেপে রাখলো।নিচে যেয়ে হাতটা পরিষ্কার করে নিলো।
এই দুমিনিট সময়ে মিথিলা চোখে একটু কাজল দিয়ে নিলো।ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক।মিথিলা রিমনকে ঘায়ল করেছিলো এই চোখের কাজল দিয়েই।যত রাগই করতো না কেন চোখে কাজল দিয়ে বসতেই রাগ পানি হয়ে যেতো।হয়তো উপরে উঠে চোখে কাজল দেওয়া দেখে আবারো প্রেমে পড়ে যাবে।
রিমন বেশ সেনসিটিভ পারসোনালিটির মানুষ।কোনো কিছুই তার চোখকে ফাকি দিতে পারে না।মিথিলার কাজল দেওয়া চোখ দুটিও না।
দরজাটা ভেজে দিয়ে বসতে বসতে মিথিলার কাজল কালো চোখ আর গোলাপি পাপড়ির মতো ঠোঁট টা মনে শিহরন তুলে দিলো।মিথিলাকে জাপটে ধরে বিছানায় শুইয়ে দিলো।
কেন জানি না আজ মিথিলাকে কষ্ট না দিয়েই ভালো বাসতে ইচ্ছা করছে।ওই চোখের গভিরতাতে মিলিয়ে যেতে মন চাইছে।মন চাইছে চোখের কাজলটা একটু লেপটে দিতে মন চাইছে ওই পাপড়ির মতো ঠোঁটটাই আলতো ছুয়া দিতে।
মিথিলাও রিমনের ওই ভালো বাসার চাহনিতে হারিয়ে গেছে।রিমনকে জাপটে ধরে গায়ের গন্ধটা নিচ্ছে।অপেক্ষা করছে কখন রিমন তার ঠোঁটটা স্পর্শ করবে।
মিথিলার মোহে মুগ্ধ হয়ে ঠোঁটা স্পর্শ করতেই সজিবের কথা মনে পড়ে গেল।হাত নেড়ে বলছে ছলনাময়ীর ছলনায় ডুব দিস না।জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে যাবি।ধ্বংস হয়ে যাবি।
চোখ খুলে মিথিলার চেহারা দেখতেই রিমনের দেহে প্রতিশোধের আগুন জ্বলে উঠলো।স্বজরে মিথিলাকে ধাক্কা দিয়ে নিচে ফেলে দিলো।তার সেই পাগল করা চোখের কাগজ,, পাপড়ির মতো ঠোঁট কিছুতেই আটকাতে পারলো না।
মিথিলা পড়ে গিয়ে ব্যাথা পেয়েছে ঠিকই কিন্তু তার চাই অধিক ব্যাথা পেয়েছে হৃদয়ে।যা রিমন একবারও দেখলো না।তবে মিথিলা এটুকু বুঝতে পেরেছে শুধু সুন্দর্য দিয়ে রিমনকে ঘায়েল করা যাবে না।আগে রিমনের মন থেকে ঘৃণাকে ছুড়ে ফেলে দিতে হবে।
রিমন রাগের চোটে নিজের চুল টানতে টানতে শুয়ে পড়লো।মিথিলা এখনো সেখানে পড়ে আছে।নিজে নিজেই উঠতে হবে,,রিমনতো আর এসে বলবে না সোনা তোমার লাগেনি তো?
তবে রিমনের পাশে ঘোমানো ঠিক হবে না।ওর পাশেই শুয়েছি জানলে হয়তো ক্ষেপে যাবে,, তার চাইতে বরং মেঝেতেই বিছানা করে পড়ে থাকা ভালো।
কিছুক্ষন বাদেই আযান দেবে সারাদিন অনেক খাটুনি গেছে একটু না ঘুমালে কাল আবার জীবন যুদ্ধের লড়াই লড়বো কেমন করে।নিজেকে সামলে রেখে লড়তে হবে।
বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই ঘুম চলে আসলো।
মুয়াজ্জিনের ডাকে ঘুম ভাংলো।ওজু করে নামাজটা পড়ে নিলাম।রিমন এখনো ঘুমাচ্ছে।নিজেরো ঘুমটা পুরা হয়নি আবার একটু ঘুমিয়ে নিলে ভালো লাগতো।
এদিকে সকালের সূর্য উঁকি দিয়েছে।চারদিকে পাখির কিচিরমিচির শোনা যাচ্ছে।
রাতের নিরব শহর ব্যস্ত হয়ে উঠেছে।মানুষ ছুটছে তাদের জীবন যুদ্ধে।
এরি মধ্যে কে যেন দরজায় ধাক্কা দিচ্ছে।ফোনের পাওয়ার বাটন চাপতেই ভিমড়ি খাওয়ার জো সাড়ে আটটা বেজে গেছে।নতুন বউ রাত দুপুর পর্যন্ত ঘুমায় এটা কেউ জানলে বাপ মার মুখ পুড়বে।
দরজা খুলতেই দেখি শ্বাশুড়ি আম্মু দাড়িয়ে আছে।আসলে আম্মু নামাজ পড়ে একটু ঘুমাতেই বেলা হয়ে গেছে। বুঝতে পারিনি।
আম্মু:আরে পাগলি মেয়ে তাতে এতো ভয় পাওয়ার কি আছে? আমি কি কিছু বলেছি।উঠছিস না দেখে ডাকতে এলাম।যা আর একটু ঘুমিয়ে নে।
মিথিলা:না না আম্মু আমার আর ঘুমাতে হবে না।আব্বু কই? আব্বু কি অফিসে চলে গেছে?
আম্মু:সেই সকালে উঠেছে এখনো চা টা পর্যন্ত খাইনি। কাল কি চা খাইয়েছিস তোর হাতের চা ছাড়া কারো বানানো খাবে না।
বলেন কি আম্মু? তাইলে আরো আগে ডাকদিলেন না কেন? আমি এখনি চা বানিয়ে দিচ্ছি।
মিথিলা নিচে যেয়ে নিজ হাতে চা করে সবাইকে দিলো।শ্বশুর আব্বুর সাথে বেশ মিশে গেছে।মনেই হচ্ছে না মিথিলা ছেলের বউ নিজের মেয়ের মতো খুনসুটি করছে।
আব্বু:কি রে রিমন কে চা দিলি না।ও কি এখনো ঘুমাচ্ছে?
মিথিলা:হ্যা বাবা!! উঠেছিলো আবার ঘুমিয়ে গেছে।বলেছে না ডাকতে।পরে উঠবে।(একটু মিথ্যা বললাম)।
আব্বু:এতো বেলা করে তো ঘুমায় না আজ কি হলো।আচ্চা উঠলে চা করে দিস।আজ অনেক বড় একটা মিটিং আছে। আমাকে এখনি বের হতে হবে।
মিথিলা:সে কি আব্বু!! না খেয়েই চলে যাবেন? নাস্তাটা করে যান।
না রে অফিসে গিয়ে খেয়ে নিবো।এখন সময় নেই।রাতে সবাই এক সাথে খাবো।
ওকে আব্বু সাবধানে যাবেন।আল্লাহ হাফেজ।
মিথিলা শ্বুশুর আব্বুকে বিদায় জানিয়ে রান্নাই হাত লাগালো।বউ শ্বাশুড়ি দুই জন মিলে গল্প করছে আর রান্না করছে।
আচ্ছা আম্মু কালতো আমাকে দেখতে বড় খালামনি আসলেন ছোট খালামনি এলেন না কেন? (যদিও আমি কারনটা জানি তার পরও একবার যাচাই করে নিচ্ছি।হয়তো কোনো সুরাহ পেয়ে যাব।)
কথাটা জানতে চাইতেই দেখি আম্মুর চোখে পানি চলে আসলো।চোখ মুছতে মুছতে তোর ছোটো খালামনি এখন দেশে নেই।ছেলেকে নিয়ে বাইরে আছে।
কেন আম্মু? বাইরে কেন?
তাইলে শোন কি হয়েছে,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
রিমনের বলা ঘটনার সাথে হুবহু মিল।শুধু মেয়েটা যে আমি নিজেই সেটা জানেন না।তিনিও জানলে আর ছেলের বউ বানানো তো দূরের কথা হয়তো নাম টাও নিতো না।
এখানে থাকতে আর ভালো লাগছে না।কিছু না করেও সকলের কাছে অপরাধী হয়ে আছি।
যাই দেখি রিমনের ঘুম ভেঙেছে কি না।পাশে থাকলেও দোষ না থাকলেও দোষ।ডেকে না পেলে অনেক রেগে যাবে।
ঘড়িতে বারটা বেজে গেছে তবুও রিমনের ঘুমটা ভাংছে না।ভয়ে ডাকতেও পারছি না কালকের মতো আজও কোনো শাস্তি না পেতে হয়।
আম্মুর রান্নাও শেষ প্রায়।আমি রিমনকে নিয়ে খেতে যাচ্ছি না দেখে আম্মু নিজেই এসে রিমনকে ডেকে দিলো।আম্মু ডেকেছে তাই কিছু বলেনি।আমি হলে হয়তো রেগে যেতো।
রিমন বাথরুমে চলে গেল।গোসল সেরে বের হবে কাপড়টা নিয়ে গেছে।আমি রিমনের অপেক্ষায় বসে আছি।দুজন এক সাথে না গেলে আম্মু সন্ধেহ করবে।
কিছুক্ষন বাদেই রিমনের ফোনটা বেজে উঠলো।কিন্তু রিমনতো বাথরুমে।কোনো দরকারি ফোন হলেতো সমস্যা হয়ে যাবে।
আবার ফোনটা পিক করলে রিমন যদি রেগে যাই।
যাই হোক ফোনটা ধরতে হবে হাজার হোক আমিতো ওর স্ত্রী।কিন্তু হাতে নিতেই মাথাটা বন বন করে উঠলো।গলা শুকিয়ে যাচ্ছে।ছোটো খালামনি বলে নামবারটা সেভ করা।তার মানে রিমনের ছোটো খালামনি ফোন করেছে।
ফোন ধরাটা কি ঠিক হবে।যদি জানতে চাই কে আমি।আমাকে চিনবে না কিন্তু যদি নামটা জানতে চায় তখন কি হবে,,,,,,,,,,
.
.
চলবে,,,,,,,,,

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ