সম্পর্কের টান
পর্ব-৫+৬
রাতের খাবার শেষে মাকে সাহায্য করে তৃষ্ণা নিজের ঘরে ঢুকতেই,, বিছানায় আধশোয়া মাহসান ঢেঁকুর তুলে বললো,
-"মা ভালো রাঁধেন। শুধু ভালো রাঁধেন বললে ভুল হবে! খুবই ভালো রাঁধেন।"
বিবর্ণ ঠোঁটে হাসি ফুটিয়ে তৃষ্ণা বললো,
-"হুম। মা বরাবরি ভালো রাঁধে। রান্নার হাত যথেষ্ট ভালো মার।"
-"তা তুমি তার কাছ থেকে কিছু শিখেছো?"
দরজার কপাট লাগিয়ে তৃষ্ণা এগিয়ে এল মাহসানের দিকে। বললো,
-"শিখেছি। তবে এতো ভালো হবে না।"
-"তোমার হাতের রান্নাও তাহলে একদিন খেতে হয়!"
-"আপনি বললে কালই খাওয়াবো।"
-"সেটা না হয় দেখা যাবে। একটা সিগারেট ধরাতে পারি?"
-"এতোক্ষণ তো রুমে একা ছিলেন। চাইলেই তখন ধরাতে পারতেন।"
উঠে বসতে বসতে মাহসান বললো,
-"একটা অনুমতির দরকার আছে না!"
মাহসানের কথায় হেসে ফেললো তৃষ্ণা। বললো,
-"অনুমতিপত্র নামঞ্জুর করলাম।"
-"এতোটা নির্দয় কিন্তু আমার বউ নয়! তবে,,"
তৃষ্ণা ড্রেসিং টেবিলের দিকে এগুতে এগুতে বললো,
-"তবে?"
-"তবে....!"
-"তবে কী?"
-"বাট আই লাভ আনকাইন্ড পারসোন!"
মাহসানের ঘোরপেঁচ যুক্ত কথার কিছুই মাথায় ঢুকলো না তৃষ্ণার। চুলে চিরুনির ছোঁয়া লাগাতে লাগাতে বললো,
-"আপনি চাইলে সিগারেট খেতে পারেন।"
মাহসান আর দেরি না করে প্যান্টের পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট বের করে দিয়াশলাই জ্বালিয়ে সিগারেট ধরলো।
দুই ঠোঁটের মাঝে সিগারেট নিয়ে খুব আরামসে এক একটি টান দিয়ে মুখের মাঝে ধোঁয়া টেনে নিচ্ছে মাহসান। কিছুক্ষণ পর পর সেই ধোঁয়ার কিছু অংশ নাক মুখ দিয়ে বের করে দিচ্ছে। দুর থেকে মাহসানের এই কার্যকলাপ গুলো লক্ষ করছে তৃষ্ণা। আচ্ছা! কি হয় এই সিগারেট টেনে! শুধু একটু আধটু ধোয়াই তো শরীরের ভেতরে যায়। বাদবাকি টুকো তো বাইরেই এসে পড়ে। তাহলে কি হয় এই ছাইপাঁশ খেয়ে?
-"তোমাকে যে একটি শপিং ব্যাগ দিয়েছিলাম, বলেছিলাম রাতে কথা হবে সেটি নিয়ে।"
-"হু।"
-"যাও, নিয়ে এসো ব্যাগ টা।"
মাহসানের কথায় একপা নড়লো না তৃষ্ণা। চুপচাপ ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে রইলো।
-"তৃষ্ণা তৃষ্ণা?"
-"হু।"
-"কি হলো?"
-"আমি ওটা পড়তে পারবো না।"
খুব স্বাভাবিক ভাবেই মাহসান বললো,
-"তারমানে তুমি খুলে দেখেছো?"
-"হু।"
-"সমস্যা কোথায়?"
-"জানি না। কিন্তু আমি পড়তে পারবো না।"
এ পর্যায়ে সিগারেট এশট্রে তে রেখে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লো মাহসান। গিয়ে দাঁড়ালো তৃষ্ণার মুখোমুখি।
-"প্লিজ, তৃষ্ণা। আমি অনেক এক্সপেক্ট করে এনেছি নাইটি টা।"
তৃষ্ণা মেঝের দিকে তাকিয়ে শাড়ির আঁচল কচলাতে কচলাতে বললো,
-"প্লিজ,, আমি পড়বো না।"
মাহসান দুই হাতে উঁচু করে ধরলো তৃষ্ণার মুখ। বললো,
-"প্লিজ,, শুধুমাত্র তোমার জন্য কিনেছি।"
-"কিন্তু,, আপনি দেখেছেন ওটা কেমন স্টাইলের? টু পিচ, সাথে সামান্য নেটের কাঁচ। ওই নেটের নকশা থাকাও যা না থাকাও তা। আমার পক্ষে সম্ভব না।"
-"হুম,, আর এর জন্যই তো তোমাকে কাল ওটা দেই নি। কারণ তুমি অস্বস্তি তে পড়তে। প্লাস আমাকেউ কি ভাবতে না ভাবতে।"
-"আজও তো আমাকে অস্বস্তি তে ফেলছেন আপনি। না?"
-"আমার মনে হয় না। আর আমিই তো, তৃষ্ণা।"
খানিকটা সময় নিরব থেকে কিছু একটা ভাবলো তৃষ্ণা। তারপর বললো,
-"আমার সময় লাগবে। প্লিজ, ফোর্স করবেন না।"
বলেই রুম ছেড়ে ওয়াশরুমের দিকে পা বাড়ালো তৃষ্ণা। মাহসান কিছুক্ষণ চুপচাপ দাঁড়িয়ে রইলো সেখানে। তারপর একদু পা করে এগুলো ওয়াশরুমের দিকে। দরজা নক করে কঠিন স্বরে বললো,
-"সমস্যা কি তোমার! ভালো জিনিশ তো তোমার ভালো লাগবে না। যদি এখন একটা শাড়ি এনে দিতাম, ঠিকই পড়ে বসে থাকতে। অথচ নাইটি পড়তে চাইছো না কেন! কি সমস্যা পড়লে? স্বামী হিসেবে তোমাকে একটাবার আমি দেখবো না ভালোভাবে? তাইলে কি বিয়ে করেছি তোমাকে পূজো দিতে? আমি বেরুচ্ছি। তুমি নাইটি পড়বে না তো? আমিও আর আসছি না এ বাড়ি।"
বলেই মাহসান পা বাড়ালো বাড়ির বাইরের দিকে।
ফেসবুকে ঢুকতেই অর্থি দেখতে পেল রায়ান ১দিন হলো অনলাইনে আসছে না। অবশ্য বাবা হারিয়েছে সে। এই শোক, দুঃখ, কষ্টের মাঝে কেউ ফেসবুকে আসবে নাকি! ভাবতেই নিজের মাথায় নিজেই একটি চর বসিয়ে দিল সে। কিন্তু,, কিন্তু,, কিন্তু সে কেন ভাবছে রায়ানের কথা? যাকে একদমই চেনে না সে, আর ২৪ ঘন্টা আগে তো একদম সহ্যই করতে পারছিল না তাকে! ক্লাসলেস, ফালতু বলে একাকার করে দিয়েছিল। অথচ তার একটা পোস্ট, যেটা কিনা বাবা মারা যাবার ছিল,, সেটা দেখেই এতোটা ভাবুক হয়ে গেল সে? না!! অর্থি তো এতো আবেগী মেয়ে নয়। এটা ঐতিহ্য আপুর ক্ষেত্রে মানা যায়। কিন্তু তার ক্ষেত্রে এটা অসম্ভব! কিন্তু এই অসম্ভব টাই এখন নিজে অনুভব করছে সে! কেমন যেন কষ্ট হচ্ছে বাবাহীন ওই ছেলেটির জন্য। যার সাথে একবার ভালোভাবে হাই হ্যালোও হয় নি,, তার অনলাইনে না আসাতে খারাপ লাগছে। কিন্তু কেন!!!
নিজের এসব আজেবাজে চিন্তাভাবনাকে একপাশে রেখে নিজের মন কে শান্ত করলো অর্থি। ছেলেটি ফেসবুকে সমবেদনা পাওয়ার জন্যই পোস্ট করেছিল। আর সেই সমবেদনাই কাজ করছে অর্থির মাঝে ছেলেটির প্রতি। এ ছাড়া আর কিছু না!
ওয়াশরুম থেকে বের হয়ে বিছানার এক কোণায় বসে চুপচাপ অপেক্ষা করতে লাগলো তৃষ্ণা মাহসানের জন্য। মাহসান কি একটা জিনিশ বুঝতে পারছে না,, তৃষ্ণা সাধারণ ঘরের একটা মেয়ে ছিল! কখনো ওভাবে নাইটি পড়া হয় নি। আর মাহসানের পড়া নাইটি টা অন্য ৮/১০ টি নাইটির মতো ও না। এটা সম্পূর্ণই ভিন্ন ধাচের। উপরে বড় টর কোটি থাকলে না হয় পড়া যেত। আর সবচেয়ে বড় কথা এটা পড়ে তৃষ্ণা কম্ফর্ট ফিল করবে কিনা এটা কি একটা বার ভাবতে পারতো না মাহসান? আজ দুপুরে শপিং ব্যাগ খুলে নাইটি টা দেখার পর চোখ কপালে উঠে গিয়েছিল তৃষ্ণার। তবুও নিজেকে সামলে নিয়ে ভেবেছিল, সব কিছু গুছিয়ে উঠলে না হয় নাইটিটা নিজে একবার পড়ে দেখে তারপর মাহসানের সামনে যাবে। যেহেতু মাহসানের বউ সে। আর এতোটুকু আবদার মাহসান করতেই পারে তার সহধর্মিণীর কাছ থেকে। কিন্তু আজই যে মাহসান...!!
আরে! সে নিজে তো আর বলিউডের কোনো অভিনেত্রী নয়! আর তার সাথে মাহসানের মাত্র ১ দিনের সম্পর্ক। শারীরিক দিক দিয়ে যেটা পূর্ণ হলেও মনের দিক দিয়ে হয়তো যেটা ১০০ তে ৫ এ পৌঁছেছে। তাহলে কি শারীরিক সম্পর্কই সব একজন স্বামী স্ত্রীর মাঝে? মনের কোনো মুল্য নেই সম্পর্কে??
অন্য আর দশটা সম্পর্ক জানি না,, তবে মাহসান, তুমি যদি মনকে মূল্য দিতে তাহলে আমাকে বুঝতে। সামান্য একটা বিষয় নিয়ে এভাবে জেদ করতে না। তবে ভালোই হয়েছে! ১দিনেই তোমাকে বুঝতে পারছি।
ভাবতেই বিছানা ছেড়ে উঠে দাঁড়ালো তৃষ্ণা। রাগ উঠলো তার বাবা লিয়াকত সরকারের উপর। কেন বিয়েটা দিল তাকে! সাধেই কি বিয়ে করতে চাচ্ছিল না সে! এখন হারে হারে সে টের পাবে বিয়ের ফল। এরেঞ্জ ম্যারিজ! না? খুব মজা! দুজন অচেনা, অজানা মানুষ! ধীরেধীরে নিজেদের জানা বোঝা! ভালোবাসা উৎলে উৎলে পড়া! আরো কতো কি বলেছিল একেকজন। এখন তারা কই! এসে দেখে যাক, বিয়ের পরের তাদের বোঝাপড়া, ভালোবাসার কী নমুনা!!
(চলবে)
""সম্পর্কের_টান""
#পর্ব-৬
ঘন্টাখানেক রুমে অপেক্ষার পর তৃষ্ণা এগুলো ড্রইংরুমের দিকে। ড্রইং এসে আলো জ্বালাতেই তৃষ্ণা তাদের ফ্লাটের সদর দরজা খোলা দেখতে পেল। টেবিলের উপরে থাকা মেইন গেটের চাবিও নেই। তারমানে মাহসান সত্যিই বাড়ি থেকে চলে গেছে। আর কখনওই কি মাহসানের সাথে দেখা হবে না তার? মাহসান কি একেবারের জন্য তাকে ফেলে রেখে চলে গেল? ভাবতেই বুকটা কেপে উঠলো তৃষ্ণার। চোখের কোণা বেয়ে গড়িয়ে পড়লো কয়েক ফোটা জল।
কি এমন হতো নাইটি টা পড়লে? মাহসান তো অন্যায় কোনো আবদার করেনি। যেহেতু কাল রাতে মাহসান তাকে, আর সে মাহসানকে সম্পূর্ণ নিজের করে নিয়েছে,, নিজের সব দিয়ে দিয়েছে মাহসান কে,,, সেখানে আজ এত সতীসাবিত্রী সাজবার তো কোনো মানে নেই। মাহসানের একদম ব্যক্তিগত সম্পত্তি সে। সেখানে মাহসান তো তার কাছেই এই আবদার গুলো করবে,, বাইরের কোনো মেয়ের কাছে না। তাহলে স্ত্রী হিসেবে মাহসানের এই চাওয়ার কি মূল্য দিতে পারতো না সে? আর মাহসান তো আজ তাকে নাইটি টা দিয়েছে যাতে তাকে অস্বস্তিতে না পড়তে হয়। সেখানে সে নিজে কি করছে? নিজেকেই নিজে অস্বস্তিতে ফেলছে। এগুলোর কি কোনো মানে হয়! মাহসানের কথায় নাইটি টা পড়ে নিলে আজ এত সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো না। বেচারা এত রাতে কোথায়, কিভাবে আছে কে জানে! হুম, মাহসান সাধারণ এই নাইটি নিয়ে রাগ দেখিয়ে এত রাতে না চলে গেলেও পারতো। কিন্তু সে নিজেও তো সাধারণ এই নাইটি না পড়া নিয়ে যা করলো সেটাই বা কম কি!! ভাবতেই নিজের প্রতি প্রচণ্ড রকমের রাগ হতে লাগলো তৃষ্ণার। এখন কি করা উচিৎ তার? সকালে বাবামা যখন জানতে চাইবে মাহসানের কথা, তখন কি উত্তর দিবে সে? মাহসান তুচ্ছ একটা ব্যাপার নিয়ে তাকে ফেলে রেখে চলে গেছে,, আর কখনওই তোমাদের মেয়েকে নিতে আসবে না মাহসান! বাবামা কে কি বলে বুঝ দেবে সে?? ভাবতেই গলা শুকিয়ে গেল তৃষ্ণার। আর দেরি না করে আবারো ঘরে ফিরে গেল তৃষ্ণা। ফোন হাতে নিয়ে ডায়েল করতে লাগলো মাহসানের নাম্বারে।
-"সরি!!"
হঠাৎ কানের পাশে আওয়াজ টা শুনে আত্মায় পানি ফিরে এল তৃষ্ণার। স্বস্তির নিশ্বাস ফেলে পিছন ফিরে সে ঝাপিয়ে পড়লো মাহসানের বুকে। কাঁদোকাঁদো গলায় বললো,
-"এই তুচ্ছ একটা ব্যাপার নিয়ে তোমার চলে যেতে হবে? কি এমন হয়েছিল যে, এখানে আমাকে একা ফেলে তুমি চলে গেলে? সকালে কি বলবো আমি বাবামা কে?"
তৃষ্ণার কথায় হতভম্ব হয়ে মাহসান বললো,
-"আমি চলে গিয়েছি নাকি!"
এ পর্যায়ে হুশ হলো তৃষ্ণার। বিয়ের পরদিন বর স্ত্রীকে তার বাড়িতে ফেলে রেখে চলে গেছে,, এমন কিছু ঘটলে অনেক বড় কিছুর সম্মুখীন হতে হত তাকে। আর সেসব ভেবেই মাথাটা পুরো আউলিয়ে গেছে তার। মাহসানের গলার আওয়াজে হাফ ছেড়ে বাঁচলেও মাহসান যে চলে যায় নি, এটাই ভুলে গিয়েছিল সে।
-"এই তৃষ্ণা?"
-"হু।"
মাহসান নিজের বাহুডোরে তৃষ্ণাকে পেয়ে নিজের সব শক্তি দিয়ে জড়িয়ে ধরলো তাকে। খুব ধীর কণ্ঠে বললো,
-"আমার এভাবে তোমাকে ফোর্স করা ঠিক হয় নি। আমার তোমার সমস্যাটা বোঝা উচিৎ ছিল।"
-"উহু,, তুমি তো অন্যায় আবদার করো নি।"
-"অন্যায় আবদার করেছি। বিয়ের একদিনের মাথায় এটা আবদার করা অন্যায়। তারপরও আমাদের এরেঞ্জ ম্যারিজ। যেখানে কিনা ২/৩ দিন আগে আমরা একে অপরকে চিনতাম না, জানতাম না।"
-"তারপরও এখনতো তুমি আমার হাজবেন্ড। যেখানে আমরা ফিসিকালি ইনভলবও হয়েছি। সে অনুযায়ী আমার কাছে এসব চাওয়া পাওয়া তোমার থাকবেই। অন্য কারো কাছে তো আর চাচ্ছো না তুমি। নিজের ওয়াইফের কাছেই চেয়েছো।"
-"তবুও,, আমার এমন অদ্ভুত রিয়াক্ট করা ঠিক হয় নি। তুমি যখন বললে কিছু টাইম তোমার লাগবে, তখন আমার উচিৎ ছিল তোমাকে টাইম দেয়া। ফালতু কিছু কথা বলে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া নয়। সরি, তৃষ্ণা। কথাগুলো বলা একদম উচিৎ হয় নি আমার।"
মাহসানের বুক থেকে এ পর্যায়ে মাথা উঠালো তৃষ্ণা। ঠোঁটে হাসির রেখা ফুটিয়ে বললো,
-"জানো? কিছুক্ষণের জন্য বাবার উপর এমন রাগ লাগছিল! কেন আমাকে তোমার সাথে বিয়ে দিল সে! কিন্তু তারপর যখন ধীরেধীরে ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করলাম, তখন মনে হলো তোমার চাওয়াটা ভুল কিছু না। আর এই রাইট তোমার আছে। কিন্তু সত্যি বলতে, তুমি জানো আমি কেমন ফ্যামিলির মেয়ে। কখনো ওভাবে নাইটি পড়া হয় নি। আর তোমার আনা নাইটি তো,, কি বলবো!"
-"সরি!!"
-"উফফ!! শোনো না!"
-"আচ্ছা, বলো।"
-"সত্যি বলতে আমি ভেবেছিলাম আমাকে তোমার আনা নাইটি টা পড়ে জোকার জোকার লাগবে। আমি তো আর ক্যাটরিনা কাইফ নই!"
বলেই খিলখিলিয়ে হেসে উঠলো তৃষ্ণা। মাহসান কিছুক্ষণ মুগ্ধ দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো তৃষ্ণার হাসিমাখা মুখের দিকে। তারপর বললো,
-"এই নাইটি নিয়ে যা ঘটলো তাতে কিন্তু লাভই হয়েছে আমার। বলো, কী লাভ?"
তৃষ্ণা হাসি থামিয়ে ভ্রু কুঁচকে বললো,
-"কী লাভ?"
-"প্রথমত তুমি খেয়াল করেছো কিনা জানি না! তোমার আপনি কিন্তু তুমিতে ট্রান্সফার হয়েছে। আর দ্বিতীয়ত তোমার মাঝের চাঞ্চল্যতা এই প্রথম দেখার সুযোগ হলো আমার।"
মাহসানের কথায় কিছুটা লজ্জা পেয়ে গেল তৃষ্ণা। মেঝের দিকে চেয়ে বললো,
-"জ্বি,, না!! আমি আপনাকে আপনি করেই সম্বোধন করেছি।"
-"তুমি বলেছো।"
-"আপনি বলেছি।"
-"তুমি বলেছো।"
কথা ঘুরানোর জন্য তৃষ্ণা বলে উঠলো,
-"দেখি ছাড়ুন।"
মাহসান আরো জোরে আঁকড়ে ধরে দুষ্টু হাসি দিয়ে বললো,
-"কী বললে?"
-"ছাড়তে বলেছি।"
-"ঠিকভাবে বলো।"
-"ছাড়ুন।"
-"আজ আর ছাড়া পাচ্ছো না তুমি।"
বলেই তৃষ্ণাকে পাঁজকোলে উঠিয়ে বিছানায় শুয়িয়ে নিজের ভর টুকুও তৃষ্ণার উপর ছেড়ে দিল মাহসান। মাহসানের মাথার চুল গুলো ঠিক করতে করতে তৃষ্ণা বললো,
-"কোথায় ছিলে এতোক্ষণ? দরজা খোলা দেখলাম। বাইরের গেটের চাবিও দেখলাম না।"
তৃষ্ণার এক গালে চুমু দিয়ে মাহসান তৃষ্ণার দিকে তাকিয়ে বললো,
-"ড্রইংরুমে আসতেই দেখলাম তৌহিদ ভাই বাইরে কিছুক্ষণ হাটাহাটির জন্য বেরুচ্ছে। তাই ঘুম না আশার অজুহাত দিয়ে আমিও বেরিয়ে পড়লাম তার সাথে।"
বলেই অপর গালে চুমু খেল মাহসান। তারপর ধীরেধীরে ঠোঁটের দিক এগুতেই তৃষ্ণা বলে উঠলো,
-"আমি গিয়ে নাইটি টা পড়ে আসি?"
-"উহু।"
-"প্লিজ,, প্লিজ!!"
-"না,, না!"
-"প্লিজ,, আসি না পড়ে! প্লিজ,, প্লিজ।"
মাহসান মুখে বিরক্তি ফুটিয়ে বললো,
-"তুমি কিন্তু বড্ড জ্বালাচ্ছো! সময়জ্ঞান একদম নেই তোমার। দেখছোই একটা সিরিয়াস মোমেন্টে আছি! আর ওমনি শুরু হলো তোমার! কাল তো এই সময় ঠিকই বিড়াল ছানার মতো মিউ মিউ করছিলে। আজ হঠাৎ বিড়াল ছানা থেকে সরাসরি বাঘ হয়ে গেলে কিভাবে!"
উত্তরে তৃষ্ণা বললো,
-"নাইটি পড়বো।"
-"একটা চর দেব কিন্তু!"
-"নাইটি.."
আর কিছু বলার সুযোগ দিল না মাহসান তৃষ্ণাকে। পুরু দুটি ঠোঁট দিয়ে সে চেপে ধরলো তৃষ্ণার রসালো ঠোঁট দুটি।
(চলবে)
0 মন্তব্যসমূহ
গল্প গুলো কেমন লাগলো, আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করুন।