পতিতা
পর্ব-১৭+১৮
অয়ন আমার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইল।
.
অয়ন চৌধুরী ফিরে আসতেই যেনো রেনুর সব কষ্ট দূর হয়ে যেতে লাগলো।
.
বাবাকে আরো দুদিন হাসপিটালে রেখে বাসায় নিয়ে এলাম। আগের থেকে অনেকটাই সুস্থ তবে আগের মতো আর কথা বলতে পারে না। আগে বাবার কথা এতোটাও আটকে যেতো না এখন অনেকটাই বুঝা যায় না। তাও শান্তি বাবা ভালো আছে, সুস্থ আছে।
.
তবু কোনভাবে আমি মনের ভিতর থেকে ঐ ব্যাপারটাকে সড়াতে পারছি না। যদি কখনো কোন ভাবে অয়ন চৌধুরী জানতে পারে তখন কিভাবে রিয়েক্ট করবে সে। অবশ্য আমার ক্ষেত্রে তার রিয়েক্ট করার কোন কারণ নেই। আমি তো আর তার প্রেমিকা নই আর না তার সাথে কোন সম্পর্ক আছে তার সাথে আমার৷ আমি তো তার কেউ নই তাহলে সে কেনো আমাকে আটকে রাখতে চায়। আবার এসব আকাশ কুসুম ভাবছি আর তার জন্য অপেক্ষা করছি।
.
সকাল থেকে অয়নের কাজে মন বসছে না। বসবেই বা কিভাবে বার বার রেনুর কথাই মাথায় ঘুড়ছে। এখন তো সব কিছু ঠিক যাচ্ছে তাও রেনুর মাঝে কিছু একটা চাপা আছে যা অয়ন বুঝতে পারছে কিন্তু বলছে না। হয়ত বলতে চেয়েও বলতে পারছে না। কি কথা যা রেনু বলতে নিয়েও বলছে না। সেটা না জানা অবধি অয়নের শান্তি হবে না। অয়নকে যেভাবেই হোক জানতে হবে। হঠ্যাৎ হঠ্যাৎ করেই রেনু অসহায়ের মতো তাকায় অয়েনর দিকে যেনো কোনো অপরাধবোধ রেনুকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে। কোনো অনুশুচোনা। কিন্তু কেনো??? অয়ন জিজ্ঞেসও করেছিলো কিন্তু কোন লাভ হয় নি৷ রেনু বাবার কথা বলে এড়িয়ে গেছে। আর সেটা যে রেনুর এড়িয়ে যাওয়া ছিলো তাও অয়ন বুঝতে পেরেছে। এতো দিন হলো মেয়েটা অয়নের জীবনে এসেছে কখনো দুজন স্বাভাবিক ভাবে দু-দন্ড কথাও বলে নি। না অয়ন নিজের সম্পর্কে কিছু বলেছে আর না রেনুর সম্পর্কে কখনো জেনেছে৷ তবু কোনো অজানা মায়ায় বাধা পরে গেছে। রেনুর কি হয়েছে তা তো জানতেই হবে অয়নের।
.
তাই জানার জন্য বাসায় ফিরেই টুনিকে বলে উপরে যাওয়ার জন্য কথা বলবে।
.
টুনি- ডেকেছেন আমাকে???
.
অয়ন- বোস।
.
টুনি বসতে বসতেই জিজ্ঞেস করে।
.
টুনি- কিছু কি হয়েছে???
.
অয়ন- রেনুর কি হয়েছে??
.
টুনি- মানে???
.
অয়ন- আমি তো ছিলাম না। তোকে কিছু বলেছে??? আসার পর সেদিন ওর ওভাবে আসা। ওভাবে রিয়েক্ট করা। ওর বাবা অসুস্থ সেটা ঠিক তবে জানি না কেনো আমার মনে হচ্ছে মেয়েটা কিছু লুকাচ্ছে।
.
টুনি- একটা কথা বলার ছিলো।
.
অয়ন- কি???
.
টুনি-সিকিউরিটি বলল সেদিন রাতে নাকি তাকে একটা গাড়ি নামিয়ে দিয়ে গিয়েছিলো। আর...
.
অয়ন- আর???
.
টুনি- সাথে একজন পুরুষমানুষ ছিলো।
.
টুনির কথা শুনে অয়ন অবাক হয়ে তাকায়। টুনি বেশ বুঝতে পারছে কথাটা অয়নের জন্য বিস্ময়কর লাগছে তাই আর কিছু বলল না উঠে চলে গেলো।
.
টুনির কথা শুনার পর থেকে অয়ন কিছুতেই হিসেব মিলাতে পারছে না। রেনু কি তাহলে অন্য কারো সাথে কিন্তু অয়ন তো নিষেধ করে গিয়েছিলো। এটাও ঠিক রেনুর বাবার অবস্থা খারাপ ছিলো আর হাসপিটালেও অনেক খরচ হয়েছে তবে সব তো অয়ন সামলে নিয়ে ছিলো তাহলে কেনো রেনু এমন কিছু করল। কেনো কথা শুনল না। মূহুর্তের মাঝে অয়নের প্রচন্ড রাগ উঠে গেলো। ইচ্ছে করছে সব ভেংগে ফেলতে। রাগি মানুষ গুলোর এই এক সমস্যা তাদের কথার এদিক সেদিক হলেই এরা চটে যায়। অয়ন হাতের সামনে রাখা ফ্লাওয়ার বাস টা ফেলে দেয়। দরজার পিছনে দাড়িয়ে টুনি কেঁপে উঠে। টুনি জানে এখন এমন টাই হবে তাই ইচ্ছে করেই চলে না গিয়ে দরজার পিছনেই দাড়িয়ে ছিলো। রাগে অয়ন কাউকে কল দিয়ে কথা বলতে বলতে বেড়িয়ে যায়।
.
.
সেই বিকেল থেকে শুয়ে আছি চোখে ঘুম নেই। মনের মাঝে কেমন যেনো একটা অস্থিরতা কাজ করছে। না জানি আবার কোন বিপদ অপেক্ষা করছে আমার জন্য। বিছানায় বার বার এপাশ ওপাশ করছে।
.
মা- কিরে ঘুমাস নি???
.
মার ডাকে পিছনে ফিরে উঠে বসলাম।
.
রেনু- না মা ঘুম আসছে না।
.
মা- এভাবে না ঘুমিয়ে থাকলে তো অসুস্থ হয়ে যাবি মা।
.
রেনু- ঘুমানোর চেষ্টা করছি মা ঘুম আসছে না।
.
মা- আয় তোর মাথায় তেল দিয়ে দেই।
.
আমি মার সামনে বসে পরলাম। মা অনেক দিন পর আয়েশ করে আমার চুলে তেল দিয়ে দিচ্ছে। আমি আরামে চোখ বন্ধ করে রেখেছি।
.
মা- রেনু
.
রেনু- হু
.
মা- তুই কি কিছু নিয়ে খুব চিন্তিত রে মা??
.
রেনু- হঠ্যাৎ এমন কথা বলছো কেনো মা???
.
মা- তোকে কয়দিন ধরে দেখছি সারাদিন কি যেনো ভাবিস। কি এতো ভাবিস আমাকে বল।
.
রেনু- তেমন কিছু না মা।
.
মা- তোর চাকরী নিয়ে কি কোন সমস্যা হয়েছে রে মা??
.
আমি একটা দীর্ঘনিঃশ্বাস ছাড়লাম।
.
মা- নতুন জয়েন করলি আর সাথে সাথে এতো গুলো টাকা লোন আর এতো দিন ছুটিও কাটালি।
.
রেনু- না মা ওসব নিয়ে চিন্তা করো না। অফিসে সব ঠিক আছে।
.
মা- ঠিক থাকলেই ভালো।
.
রেনু- তুমি চিন্তা করো না মা তোমার রেনু ঠিক সব সামলে নিবে দেখো।
.
মা আমার চুলে বিনি করে দিয়ে আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে দেয়। স্কুলে থাকতে মা সব সময় এমন করতেন।
.
মা- উঠে মুখ হাত ধুয়ে নে আমি তোর জন্য চা করে দিচ্ছি।
.
ঘড়িতে তাকিয়ে দেখি ৭ টা বাজে। ১ ঘন্টা পরেই আমাকে নিতে আসবে। তাই উঠে একে বারেই তৈরি হয়ে নিলাম।
.
বের হওয়ার আগের সময়টা বাবার সাথে না কাটালে আমার হয় না।
.
বেরিয়ে গেলাম। গলির মোড়ে পৌছানোর আগেই দূর থেকেই গাড়িটা দেখতে পারছি। আমাকে হয়ত দেখতে পেয়েছেন৷ আমাকে দেখেই গাড়ি থেকে নেমে এগিয়ে আসছেন সে। আমি আশেপাশে তাকাতে লাগলাম চেনা পরিচিত কেউ আছে কিনা দেখার জন্য।
.
রেনুকে দেখে অয়ন গাড়ি থেকে নেমে এগিয়ে যায়। বার বার মনে পরতেই অয়নের রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে। তখন টুনির থেকে ঐ কথা শুনার পর অয়ন প্রায় পাগল হয়ে গিয়েছিলো রেনু কোথায় ছিলো জানার জন্য। আর তা জানার মাধ্যম দুই টা এক যদি রেনু নিজে বলে দেয় সেটা রেনু বলছে না। দ্বিতীয় পথ যে মাধ্যমে অয়ন রেনুকে পেয়েছে হয়ত তার সাথে কোন লিংক আছে। হয়ত কিছু জানতে পারবে অয়ন। তাই তাকে ফোন দেয়৷ আর সেই বলে সেদিন রাতে রেনু অন্য কারো কাছে গিয়েছিলো। সেটা শুনার পর থেকেই অয়নের মাথা ঠিক নেই। প্রচন্ড রাগে অয়ন কি করবে নিজেই জানে না।
.
সে আমার কাছাকাছি আসতেই আমার ভিতরে ধুক করে উঠল৷ হয়ত ভয়ে। সে এসে আমার হাতটা শক্ত করে ধরেছেন। তার চোখ গুলো প্রচন্ড রকমের লাল হয়ে আছে৷ রাগন্ত মানুষের মতো। মনে হয় কোন কারণে খুন অথিষ্ট। আমি কিছু বলার আগেই সে আমাকে গাড়িতে বসিয়ে দিয়ে অনেক বেশি গতিতে গাড়ি চালাতে লাগলেন৷ যেনো তার ট্রেন ছুটে যাবে৷ কি হচ্ছে বা কেনো হচ্ছে আমি কিছুই বুঝতে পারছি না। এখন তাকে কোন প্রশ্ন করাটাও অবান্তর হবে ভেবে চুপ করে রইলাম৷
.
কোন রকমে বাড়ির ভেতরে গাড়িটা রেখেই সে আবার আমার হাত ধরে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। এবার আমি প্রচন্ড ব্যাথা পাচ্ছি হাতে। টুনি দেখে একবার কাছে আসতে নিয়ে দাড়িয়ে গেলো। কোন রকমে সে আমাকে টেনে বেড রুমে নিয়েই আমাকে রুমের ভিতর ছুড়ে মারলেন। আমি একপ্রকার গিয়ে ছিটকেই পরলাম। কপাল ভালো বিছানায় পরেছি না হলে খবর ছিলো আমার। এতো রেগে আছে কেনো মানুষটা৷ তার এমন রূপ তো এর আগে কখনো দেখি নি আমি। সে আমার কাছে এসে আমার মাথায় হাত দিয়ে চুলের মুঠি ধরে আমাকে তার দিকে ফেরায়। এবার আমার অজান্তেই মুখ দিয়ে বেরিয়ে গেলো।
.
রেনু- আহহ... লাগছে আমার।
.
অয়ন- তাই লাগছে??? খুব বেশি লাগছে???
.
আমি তার দিকে তাকিয়ে রইলাম। এতো রাগ। সে রাগে থর থর করে কাঁপছে।
.
রেনু- কয় জনকে প্রয়োজন তোমার??? কয় জন লাগবে???
.
সে চিৎকার করে কথাগুলো বলছে। আমি তার হঠ্যাৎ করে এমন প্রশ্ন শুনে স্তব্ধ হয়ে গেলাম।
.
অয়ন- আমাকে দিয়ে তোমার হয় না???
নাকি আমি তোমার জন্য যথেষ্ট নই???
কোনটা?? বলোওও
কেনো গিয়েছিলে অন্য কারো কাছে???
কেনো???
কেনো শুনলে না আমার কথা???
.
আমার চোখ গুলো যেনো বড় বড় হয়ে গেলো এখনি ফেটে বেরিয়ে আসবে। আমি তার দিকে তাকিয়েই আছি। সে কিভাবে জানলো।
.
অয়ন- জবাব দাও You damn কেনো গিয়ে ছিলে??? কেনো শুনলে না আমার নিষেধ???
.
কথা বলতেও আমার গলা কাঁপছে। গলা দিয়ে কোন শব্দ বের হচ্ছে না। অনেক জোর করেই গলা দিয়ে শব্দ বের করলাম।
.
রেনু- আপ...আ...আপনি আপনি কিভাবে জা...
.
অয়ন- এটা নয় আমার উত্তর দাও কেনো শুনলেন না???
আর একটু অপেক্ষা করা যেতো না আমার জন্য?? আর অল্প একটু??
.
এবার আমি তার দিকে তাকিয়ে কেঁদেই দিলাম।
.
রেনু- একটু নয় অনেকটাই অপেক্ষা করতে চেয়েছিলাম। কি করবো আমি আমার বাবাকে যে বাঁচাতে হবে। আমি আমি কোন পথ খুজে পাচ্ছিলাম না৷ পাগলের মতো ফোন দিলাম আপনাকে বার বার কল দিলাম যদি একবার রিসিভ করতেন একবার...
.
বলতে বলতেই আমি ফ্লোরে বসে পরলাম কাঁদতে কাঁদতে। অয়ন চৌধুরীও আমার সামনে বসে পরলেন।
.
অয়ন- আর একটু অপেক্ষা করতে। টুনিকে তো রেখে গিয়ে ছিলাম তোমার জন্য কেনো জানাও নি টুনিকে???
.
রেনু- বাবার ঐ অবস্থায় এতো টাকার প্রয়োজন আমার কিছুই মনে ছিলো না। আমি কি করব। কার কাছে যাবো। কাকে বলবো। টুনিকে যে জানাবো কিছুই মনে ছিলো না আমার। তবে তবে বিশ্বাস করেন ঐ মানুষটার সাথে সে রাতে আমার কিছুই হয় নি। আমি পারি নি। আমি ফিরে এসেছি। আমি সত্যি বলছি। বিশ্বাস করেন।
.
অয়ন- আমাকে ছুয়ে বলো।
.
আমি মাথা তুলে তার দিকে তাকাল। সে আমার হাতটা ধরলেন।
.
অয়ন- বলো
.
রেনু- আমি আপনাকে ছুয়ে বললে আপনি বিশ্বাস করবেন???
.
অয়ন- শুধু ছুয়ে না তুমি এমনিতে বললেও আমি তোমাকে বিশ্বাস করি। একবার বলো আমি ছাড়া অন্য কারো স্পর্শ রেনুর মাঝে নেই৷
.
তার কথা শুনে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে তার দিকে তাকিয়ে রইলাম।
.
অয়ন- শুধু একবার বলো।
.
আমি তার চোখে চোখ রেখে তার হাত ধরে বললাম।
.
রেনু- রেনুকে আপনি ছাড়া কেউ স্পর্শ করে নি।
.
তারপর সেদিন ঘটে যাওয়া সব কিছুই বললাম তাকে। ডঃ আঙ্কেলের কথা। তারপর উপায় না পেয়ে অন্য কারো কাছে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া। কিভাবে আবিদ সাহেবের সাথে দেখা হয়। তার অবিশ্বাস করা যে আমি এই লাইনের মেয়ে। তার আমাকে দিয়ে যাওয়া সব কিছুই বললাম।
.
তারপর অনেক্ষণ দুজন চুপ করে রইলাম। সেখানেই বসে ছিলাম। উঠলে দাড়ালাম সে পিছন থেকে ডাক দিলো।
.
অয়ন- কেনো এভাবে শেষ করে দিচ্ছো নিজেকে????
.
আমি পিছনে ঘুড়ে তাকালাম।
.
রেনু- শুনবেন রেনুর গল্প???
.
অয়ন- শুনবো সব জানতে চাই।
.
রেনু- তাহলে শুনুন। আমার বাবা জনাব রিজভী রহমান মা ফাতেমা সালাউদ্দিন। দুজন অসম্ভব সুখি মানুষ আর তাদের সুখের দুনিয়া তাদের তিন কন্যা। রেহনুম রহমান, অনামিকা রহমান ও তানহা রহমান যাদের কে বাবা শখ করে রেনু, অনু ও তনু বলে ডাকে। আর সেই রেহনুম রহমান আমি যাকে আপনি রেনু হিসেবে জানেন। আমার বাবার দেয়া শখের নাম রেনু। শুধু আপনি না আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশি, স্কুল, কলেজ এমনকি ভার্সিটি লাইফেও সবাই আমাকে রেনু নামেই চিনতো। হুট করে কাউকে রেহনুম বললে অনেকেই চিনতো না। ছোট বেলা থেকেই বাবা মায়ের অনেক বেশি আদরে বড় হয়েছি। সব বাবা মাই তার সন্তাদের অনেক আদর করে তবে আমার বাবা আমাদের অনেক বেশি আদর করতেন বিশেষ করে আমাকে৷ আমার বাবার জন্য আমরা তিন বোন আল্লাহ প্রদত্ত তিনটে রহমত ছিলাম। আল্লাহ নাকি আমার বাবার উপর অনেক খুশি হয়েছেন তাই তাকে প্রথম সন্তান হিসেবে আমাকে তার কন্যা সন্তান হিসেবে পাঠিয়েছেন আর আল্লাহ আরো সন্তুষ্ট হয়ে তাকে তিন কন্যার পিতা করেছেন। আমাদের তিন বোনের প্রতি বাবার ভালোবাসার কোন কমতি ছিলো না। তার কোন ছেলে নেই এটা নিয়ে বাবার কখনো কোনো আক্ষেপ ছিলো না। বাবা সব সময় বলতেন আমার মেয়েরাই আমার ছেলে। আমাকে নিয়ে খুব গর্ভ করতেন বাবা। আমি ছোট বেলা থেকেই বাবা মার সম্পূর্ণ বাধ্য ছিলাম। পড়া লেখায় ভালো ছিলাম। তাই যখন যেটাই আবদার করেছি বাবা সেটাই পূর্ণ করেছেন। আমার বাবা অনেক বেশি বড়লোক বা আমি অনেক ধনি বাবার সন্তান তা নয়। বাবার নিজের ব্যবসা ছিলো৷ অনেক বড় নয় তবে যা ছিলো ভালোই ছিলো৷ আমরা সুখে ছিলাম। আমার বাবার কোন ভাই ছিলো না তবে তার চাচাতো ভাই ছিলেন মাহমুদ রহমান। মাহমুদ চাচাকে বাবা নিজের ভাইয়ের মতোই দেখতেন। পড়ালেখা শেষ করে যখন চাচা কোন চাকরী পাচ্ছিলেন না তখন বাবাই চাচাকে নিজের সাথে রেখে দেয়। ব্যবসার নানা কাজে একজন বিশ্বস্ত মানুষ পাওয়া এখনকার দিনে অনেক বিড়ল৷ তবে আমার বাবা সহজেই মানুষকে আপন করে নিতেন আবার বিশ্বাসও করতেন। যেমন মাহমুদ চাচাকে বিশ্বাস করতেন। আমি তখন অনেকটা ছোটই যখন থেকে চাচা বাবার সাথে কাজ করেন। বাবা অনেক করেছেন তার জন্য, তাদের জন্য। চাচাকে বিয়ে দেয়া, সেটেল করা সবি আমার বাবা করেছেন। তারাও অনেক সম্মান করতেন ভালোবাসতেন। আমার বাবা মানুষটা অনেক সহজ সরল ছিলেন। অনেক বিশ্বাস করতেন বাবা চাচাকে। তাই তার কাছে কখনো কোন হিসেব চাইতেন না৷ তারপর একদিন হুট করেই বাবার অনেক বড় একটা লস হয়ে যায়। বাবাকে ভূর্তুকি হিসেবে অনেক টাকা দিতে হয়েছিলো। সেইদিন থেকে শুরু হয়ে যায় বাবার ব্যবসার লস আর আমাদের জীবনের অধোপতন। তবু বাবাকে কখনো চিন্তা করতে দেখিনি৷ এতো কিছু হচ্ছিলো কিন্তু বাবা আমাদের কখনো বুঝতে দেয় নি। ব্যবসায় একের পর এক লস শুরু হয়। ব্যাংকে রাখা টাকা গুলো শেষ হতে থাকে। বাবা যখন চাচার কাছে হিসেব চাইলেন তখন চাচাও তার রূপ বদলে নেয়। বাবার বুঝতে বাকি থাকে না ঘটনা কি ঘটেছে তাও বাবা কিছু বলেন নি। বাবা আশুলিয়াতে আমাদের তিন বোনের নামে জমি কিনেছিলেন। তার খুব শখ ছিলো সেখানে বাড়ি তুলবে আমাদের নামে। বাড়ির নাম হবে তিনকন্যা নিবাশ। শেষে কোন উপায় না পেয়ে বাবাকে সেই জমি বিক্রি করতে হয়। সেদিন জীবনে প্রথম আমি আমার বাবাকে কাঁদতে দেখেছি।
.
.
.
চলবে.......
#পতিতা
পর্ব-১৮
.
.
.
বাড়ির নাম হবে তিনকন্যা নিবাশ। শেষে কোন উপায় না পেয়ে বাবাকে সেই জমি বিক্রি করতে হয়। সেদিন জীবনে প্রথম আমি আমার বাবাকে কাঁদতে দেখেছি।
.
সেদিন সারারাত আমিও কেঁদেছিলাম। আমার বাবার চোখের পানি দেখে। আমি তখন অনার্স শেষ বর্ষে পড়ি। চাচা চলে গেলেন বাবাও একা হয়ে গেলেন৷ জীবনে প্রথম আমার আফসোস হলো আমি যদি মেয়ে না হয়ে ছেলে হতাম তাহলে আমার বাবাকে নিজের ভাই দ্বারা প্রতারণার শিকার হতে হতো না। খুব কেঁদেছিলাম আমি সেদিন। আমার বাবা আমাকে কখনো টিউশনি করতে দেয় নি। আমার এখনো মনে আছে আমি সদ্য এসএসসি পাশ করে ভালো রেজাল্ট নিয়ে কলেজে ভর্তি হলাম। আমাদের পাশের বাসার সানোয়ারা আন্টি আমাকে বললেন তার ছেলেকে পড়াতে। লক্ষি একটা ছেলে ছিলো তামিম। আমার অনেক ভক্তও ছিলো। আমি যে কি খুশি হয়েছিলাম এটা ভেবে আমি কাউকে পড়াবো। কিন্তু বাবা কিছুতেই রাজি হলেন না। কোন মতেই সে চাইতেন না ঐটুকু সময় আমার কাঁধে কোন দায়িত্ব আসুক। প্রথমে বাবার নিষেধে কষ্ট পেলেও পরে বাবার কথা শুনে আমি নিজেই কেঁদে দিয়েছিলাম। আমার বাবা আমাদের অনেক ভালোবাসতেন। যখন যেটা প্রয়োজন সেটা করেছেন। তখন বাবার এ অবস্থা দেখে বাবাকে না বলে চুপি চুপি টিউশনি খোজা শুরু করলাম। পেয়েও গিয়েছিলাম দুইটা টিউশনি। দুইটা টিউশনিতে মাসে সাত হাজার টাকা পাবো। কিন্তু বাবা মাকে না জানিয়ে কিভাবে করব। বাবাকে বললে বাবা অনুমতি দিবে না তাই মাকে বললাম। প্রথমে মাও রাজি হতে চায় নি৷ সামনে আমার পরীক্ষা এটাই শেষ বছর। যদি টিউশনি করতে গিয়ে পড়ার ক্ষতি হয়৷ অনেক কিছু বুঝালাম মাকে। কিছুতেই রাজি হতে চাইছেন না মা।
.
মা- এই কয়টা টাকায় তোর ভার্সিটির খরচ হবে না রেনু। আর তোর বাবা তো দিচ্ছে। পড়াটা শেষ করে না হয় প্রয়োজন হলে ভালো একটা চাকরী করিস।
.
রেনু- মা আমি জানি এই কয়টা টাকায় কিছু হবে না। তাও দেখো আমার প্রতিদিন এতো গুলো টাকা খরচ হয়। অন্তত আমি সেই খরচ টা তো চালাতে পারবো। আর বাবা যে টাকা দিবে তা তুমি নিজের কাছে রেখে দিও এতে কিছু টাকা তো সেভ হবে মা।
.
মা- তোর সারাদিন ক্লাস থাকে কখন পড়াবি তুই?
.
রেনু- ক্লাস নিয়ে কোন সমস্যা নেই মা। দুইটা টিউশনিই আমার ভার্সিটির কাছে। একজন কে সকালে পড়াবো ক্লাসের আগে আরেকজনকে দুপুরে পড়াবো। ক্লাসের মাঝে তো আমার গেপ থাকেই সে সময় পড়িয়ে নিবো। তুমি চিন্তা করো না মা।
.
মা- নিজের পড়া তার উপর আরো দুজনের দায়িত্ব নিতে পারবি তুই। এদিকে অনু তনুকেও তো তোরই দেখা লাগে।
.
রেনু- মা বেশ পারবো। তুমি একদম চিন্তা করো না। বাড়তি তো কিছু না সিলেবাসের পড়াটাই তো পড়াতে হবে। আর আমার অনু তনুকে আমি ঠিক সামলে নিবো। ওদের তো মাঝ রাতেও পড়াতে পারবো মা।
.
মা- তুই সত্যি পড়াবি??? তোর বাবা জানতে পারলে কষ্ট পাবে।
.
রেনু- আমি যদি তোমাদের মেয়ে না হয়ে ছেলে হতাম তাহলে কি তোমরা আমাকে তোমাদের জন্য কিছুই করতে দিতে না???
.
মা আর কিছুই বলতে পারে নি। শুধু বলেছিলো সে সময় সুযোগ বুঝে বাবাকে বলে দিবে।
.
ব্যবসাটাকে ধরে রাখতে বাবা আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন। চাচা যে পিছনে পিছনে বাবার এতো ক্ষতি করে গেছে তা আমরা কখনো কল্পনাও করতে পারি নি। বাবার নামে অনেকের থেকে টাকা লোন নিয়ে রেখেছিলো চাচা। একের পর এক পাওনাদাররা বাবাকে কল দিচ্ছিলেন। বাবার মাথায় যেনো আকাশ ভেংগে পরল। কি করবে কোন দিসে পাচ্ছিলো না। চাচার সাথে যোগাযোগ করেছিলেন। সে নিজের প্রয়োজনে লোন নিয়েছে বাবা কেনো দিবে। সে হেসে দিয়ে বলল পেপারে বাবার স্বাক্ষর আছে। আসলেই সব পেপারেই বাবার স্বাক্ষর ছিলো৷ প্রথম প্রথম সব কাগজ পত্র বাবা পড়েই স্বাক্ষর করতেন কিন্তু পরবর্তীতে কাজের প্রতি চাচার এতো ডেডিকেশন দেখে বাবা আর সেভাবে পড়তেন না। চাচাকেই জিজ্ঞেস করতেন কিসের কাগজ শুনেই স্বাক্ষর করে দিতেন। চাচার সাথে যোগাযোগ করে বিশেষ কোন লাভ হয় নি। তখনো বাবা এসব নিয়ে চিন্তা করছিলেন না। বাবার আল্লাহর উপর সম্পূর্ণ আস্থা ছিলো। আল্লাহ বিপদ দিয়েছেন আল্লাহই উদ্ধার করবেন আমাদের। মোহাম্মদপুরের পাশেই বসিলাতে আমাদের জমি কিনা ছিলো। আশুলিয়ার জায়গাটা যখন বাবা বিক্রি করলেন তখন নিজেকে এটা বলে শান্ততা দিয়েছিলেন অতো দূরে তো আমাদের গিয়ে থাকাও হবে না এর চাইতে বাড়িটা নাহয় বসিলাতেই করব। আমাদের মেয়েদের জন্ম এখানে ওরা বড় হয়েছে এখানে। এতো দূরে গিয়ে কি ভালো লাগবে ওদের।তার চাইতে সেটাই ভালো হবে। কিন্তু চাচার বৈঈমানির জন্য বাবাকে বসিলার জমিটাও বিক্রি করতে হবে। বাবা কয়েকটা ব্যাংকে লোনের জন্য এ্যাপলাই করে ছিলেন কিন্তু কোথাও থেকে লোনও পাচ্ছিলেন না। তাই বাবাকে বাধ্য হয়ে অন্য কোনো উপায় না পেয়ে ঐ জমিটা বিক্রি করতে হবে। সেখানে গিয়ে বাবা আরো বড় প্রতারণার খবর পায়। বসিলার ঐ জমিটা যখন কেনা হয় ঐ জমির খবর মূলত চাচাই দিয়ে ছিলেন। চাচার অনেক পছন্দ হয়েছিলো ঐ জমিটা। তাই বাবা বলেছিলো। এখানে বাড়ি করে দিবে চাচা এখানেই থাকবে দেখাশুনা করবেন। কিন্তু জমি বিক্রি করতে গিয়ে বাবা জানতে পারে ঐ জমিটাই নাকি বাবার না। এর আগে তো বাবার মাথায় আকাশ ভেংগে পরেছিলো কিন্তু এই খবর শুনার পর আমার বাবার পায়ের নিচের জমিনটাও যেনো সরে যাচ্ছিলো। বাবা খবর নিয়ে জানতে পারে প্রথমে বাবার নামে কেনা হলেও পরর্বতীতে কিভাবে যেনো চাচা জমিটা নিজের নামে লিখে নেয়। বাবা বুঝতেও পারে নি। আর চাচার সাথে ঐ জায়গার স্থানীয় লোকের হাত আছে। বাবা চাইলেও বেশি কিছু করতে পারবে না। সেদিন বাবা অনেক ভেংগে পরেছিলো। কারণ ঐ মূহুর্তে আমাদের কাছে সম্বল বলতে ঐ জমি টা বাদে আমরা যে ফ্ল্যাটটায় থাকতাম সেটা, মার, আমার, অনু, তনুর গয়না যা ছিলো তাই। এ ছাড়া আর কিছুই ছিলো না। বাবা দাদার যা সম্পত্তি পেয়েছিলো সে সব বিক্রি করেই ব্যবসা শুরু করেছিলেন আর আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো করেছিলেন। আর মা নানাবাড়ি থেকে অনেক বেশি সম্পত্তি পায় নি তবে যা পেয়েছিলো সেইসব বিক্রি করে তার সাথে আরো টাকা যোগ করে আমাদের এই ফ্ল্যাট টা কিনেছিলেন। বাবা দিন রাত খেটে যাচ্ছেন। কোন ভাবেই কোন উপায় পাচ্ছেন না। ঋণদাররা প্রতিনিয়ত ফোন দিচ্ছে, বাসায় আসছে, পথে-ঘাটে বাবাকে আটকাচ্ছে। বাবার বিপদ বাড়তেই থাকে। কেউ কেউ তো বাবাকে জানের হুমকিও দেয়। মা বাবার এ অবস্থা দেখে সহ্য না করতে পেের চাচিকে কল দেয়। অনেক অনুনয় বিনয় করে।
.
মা- রাহেলা মাহমুদ কে বুঝাও তোমার ভাইয়ের বিপদ দিনে দিনে বেড়েই যাচ্ছে। ওকে বলো ঋনদার দের বলতে টাকা তোমার ভাই নেয় নি। এতো গুলো টাকা সে কিভাবে দিবে।
.
রাহেলা- আমি কি বলবো ভাবি। আমি তো এসব কিছুই জানি না। কিসের টাকা।
.
মা- ওরা তোমার ভাইকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে রাহেলা।
.
রাহেলা- তাতে আমার কি?? মরলে আপনার স্বামী মরবে এটা নিয়ে আমার কোন মাথা ব্যাথা নেই। আর কখনো ফোন দিবেন না। যত্তসব ছোট লোক।
.
বলেই চাচি ফোন টা রেখে দেয়। চাচির বলা কথা শুনে মা যেনো কাঁদতেও ভুলে যায়।
.
বাবা রাতে ফিরলে মা ফ্ল্যাটের দলিল গুলো বাবার সামনে রাখে।
.
বাবা- এসব কি???
.
মা- ফ্ল্যাট টা বিক্রি করে যে যা পাবে দিয়ে দাও।
.
বাবা- কি সব বাজে কথা বলছো??? সামন্য কটা টাকার জন্য কি নিজের মেয়েদের মাথার উপর থেকে ছাদ কেড়ে নিবো নাকি??? আর আমি তো এখনো বেঁচে আছি নাকি??
.
মা- আজকে তারা তোমাকে মারা হুমকি দিয়েছে কাল যদি সত্যি সত্যি কিছু করে ফেলে তোমার। তাহলে এই তিনজনকে নিয়ে কোথায় গিয়ে দাড়াবো আমি একবার ভেবে দেখেছো???
.
বাবা- আরে তুমি শুধু শুধু চিন্তা করছো এমন কিছুই হবে না।
.
মা- কি হবে না হবে জানি না। তুমি ফ্ল্যাট বিক্রি করে দিবে বেস। আর কিছু শুনতে চাই না। তুমি থাকলেই আমাদের হবে।
.
বাবার অনেক বুঝানোতেও মা কিছুতেই শুনবেন না। মা অনেক বেশি ভয় পেয়ে গিয়েছিলো৷ আমরা তিন বোন দরজার পিছনে দাড়িয়ে সব শুনছিলাম। তনু তো কান্নাই করে দিয়েছিলো। আমি তনুর মুখ চেপে ধরে ওদের নিয়ে সেখান থেকে চলে যাই। বাবা মাকে রাজি না করাতে পেরে বাধ্য হয়ে ফ্ল্যাট টা বিক্রি করে দেয়। বাবা অনেক কষ্ট পায় অনেক৷ আমার বাবাটা পাচা স্বভাবের। কখনো নিজের কষ্টগুলো কাউকে বলতেন না। ফ্ল্যাটটা বিক্রি করতে বাবার অনেক কষ্ট হয়েছে। পাওনাদার দের টাকা দিয়ে কিছু টাকা বাবা মার নামে ব্যাংকে রেখে দেয়। আর মাত্র ৫ দিন তার পরেই আমাদেরকে ফ্ল্যাটা ছেড়ে দিয়ে চলে যেতে হবে। মা বাবাকে বলেছিলো বেশি বড় বাসা নেয়ার কোন প্রয়োজন নেই। তিন বেডরুমের বাসা নিলেই হবে। অনু তনু ছোট ওরা এক রুমে থাকবে। শুধু রেনু টা বড় হয়েছে ওর নিজের একটা রুম প্রয়োজন। রাতে বাবা কোন রকম খেয়েই উঠে গেলেন। তেমন বেশি একটা কথাও বললেন না। বাবাকে অনেক দুঃখি দেখাচ্ছিলো। আমি বাবার মুখের দিকে তাকাতে পারছিলাম না। আমার কলিজাটা ছিড়ে যাচ্ছিলো। সবাই যার যার মতো রুমে চলে গেলাম আর মাত্র হাতে গণা কয়টা রাত তার পর আমাকে আমার এই রুম বাসা সব ছেড়ে চলে যেতে হবে। আমি দু চোখের পাতা এক করতে পারছিলাম না। আমার চোখের ঘুম যেনো কোথায় হারিয়ে গিয়েছিলো। আমার, অনুর, তনুর আমাদের তিনজনেরই জন্ম এ বাসায় হয়েছে। আমাদরে ছোট থেকে বড় হওয়ার সকল স্মৃতি এখানে। ঘুম আসছে না তাই আমি এ্যালবাম খুলে বসলাম। কত স্মৃতি, কত সুখের দিন ছিলো আমাদের। আমার বাবা মায়ের সোনালীদিন। আমার চোখ দিয়ে কখন যেনো পানি বেয়ে পরল। আমি চোখের পানি মুছতে গালে হাত দিতেই শুনতে পেলাম।
.
মা- রেনুউউউউউউউউউউ
.
মাঝ রাতে মায়ের চিৎকার। আমার হাত থেকে এ্যালবাম টা পরে গেলো। হঠ্যাৎ করে মায়ের চিৎকার শুনে আমি ভয় পেয়ে যাই। মায়ের চিৎকার বাড়তেই থাকে। আমি দৌড়ে মায়ের রুমে গিয়ে দেখি মা বাবাকে ধরে চিৎকার করছে। বাবাকে এমন ভাবে দেখে আমি থর থর করে কাঁপতে লাগলাম।
.
মা- রেনু দেখ তোর বাবা কেমন করছে। কিছু কর রেনু কিছু কর।
.
.
.
চলবে........

0 মন্তব্যসমূহ
গল্প গুলো কেমন লাগলো, আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করুন।