পিচ্চি বউ।
পর্ব- ১৩ শেষ পর্ব
লেখকঃ Golpobook.tk
আমার খুব কষ্ট হচ্ছে বাবা,আমার বুকের মাঝে ব্যাথা করছে বাবা। কথা গুলো বলছে আর কাঁদছে ফাতেমা
এদিকে ফাতোর কান্না দেখে, সবাই কাঁদছে।মালার কাছে মনে হচ্ছে, তাঁর কলিজাটা ফেঁটে যাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর বাদশাহ্ কেমন জানি করতে লাগলো। ডাক্তার এসে দেখে বাদশাহ্ কেমন যেন নড়াচাড়া বন্ধ করে দিল।
রুম থেকে বের হয়ে ডাক্তার চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে বলল, সরি!আমাদের আর কিছু করার নেই! আপনারা আল্লাহ্কে ডাকেন, আল্লাহ্ যদি তাকে স্বয়ং সুস্থ করে দেন!
" কথাটা শুনেই মালা হসপিটালে ফ্লরে পড়ে গেল।সবাই মালাকে নিয়ে বেডে শুইয়ে দিল বাদশার মা মালার মাথায় পানি দিল ঠান্ডা পানি দিয়ে শরিরটা মুছে দিতেই মালা ঘুমিয়ে পড়ে ...... ..... এদিকে সবাই কান্না করছে। ফাতেমা গিয়ে বাদশার মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছে! আর বাবা বাবা করে ডাকছে। ফাতেমার কান্না দেখে সবাই কাঁদছে।
বাদশার স্যালাইন নেওয়া বন্ধ হয়ে গেছে!
হঠাৎ,ডাক্তার এসে বাদশার মুখ থেকে, অক্সিজেন মাক্স খুলে দিল। স্যালাইনটাও খুলে দিয়ে বলবো, বাদশাহ্ আর কোনদিন ফিরবে না। যা ভেবেছিলাম তাই হলো।
মালা ভাবতে পারছে না বাদশাহ্ মারা গেছে!
সবাই কান্না করছে, মালা নিঃস্তব্ধ হয়ে গেছে, ফাতেমা কাঁদছে আর বলছে" বাবা কথা বলো বাবা! কথা বলবে না আমার সাথে? বাবা তুমি আর আমাকে পাপ্পি দিবে না? আমার না খুব কষ্ট হচ্ছে বাবা। ও আল্লাহ্ আমি ছোট বলে আমার চোখের পানি দেখে না। ও আল্লাহ্ তুমি তো বলেছে, ছোট বাচ্চারা নিষ্পাপ হয় তাঁদের কোন পাপ থাকে না তাঁদের কথা অগ্রাহ্য করতে পারো না। ওহ আল্লাহ্ দেখো আমি কাঁদছি, তুমি আমার বাবাকে বলো আমার সাথে কথা বলতে, তুমি কথা বলতে বললে বাবা আর চুপ করে থাকতে পারবে না। দেখতো বাবা আমার সাথে অভিমান করেছে, আমাকে কুলে নেই না আদর করে না। আমার কষ্ট হয় না বুঝি। বাবা ও বাবা কথা বলো।
মা মা দেখ বাবা কথা বলছে না। বাবাকে বলো কথা বলতে। এদিকে সবাই বাদশার জানাযা করে কবরে নিয়ে যাচ্ছে। মালা বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে বাদশার চলে যাওয়ার দিকে!
কলিজাটা ফেঁটে যাচ্ছে, আজ একটি ভুলের জন্য বাদশাহ্ সারাজীবনের জন্য হারিয়ে গেল মালার জীবন থেকে।
মম বাবাকে কোথায় নিয়ে যায়। বলো না মা, বাবাকে সবাই কোথায় নিয়ো যায়। বাবা কি রাগ করেছে তাই নিয়ে যাচ্ছে। বাবা আবার কখন আসবে মা? বলো না মা আমার বাবাকে সবাই কোথায় নিয়ে যায়।
ফাতেমার কথা শুনে মালার কষ্টে বুকটা ফেঁটে যাচ্ছে নিশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। ফাতেমাকে বুকের সাথে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে কাদছে মালা। ফাতেমাকে কি বলবে, সে উওর যে মালার কাছে নেই। এদিকে বাদশাকে কবরে নামালে মালা আর থাকতে পারে না, দৌঁড়ে চলে যায় কবরের কাছে গিয়ে বলতে লাগে" আমি আমার স্বামীকে কোথাও যেতে দিবো না, তোমরা কেউ আমার স্বামীকে দূরে সরিয়ে দিয়ো না"!
এদিকে মালার চিল্লানী শুনে বাদশার বাবা মালাকে গিয়ে বলে, কি হয়েছে মা তুই কাঁদছিস কেন?
বাবা বাদশাকে কবর দিয়ে দিচ্ছে, বাদশাকে প্লিজ কবর দিতে দিয়েন না, ওকে ছাড়া আমি বাঁচবো না। বাবা সত্যি ওকে ছাড়া মরে যাবো। ( মালা)
মা'রে তুই দুঃস্বপ্ন দেখেছিস। বাদশাহ্ বেঁচে আছে। ডাক্তার আল্লাহকে ডাকতে বললো। আমি জানি তুই বাদশাকে অনেক ভালবাসিস। এতো কষ্ট দেওয়ার পরও তুই ওকেই ভালোবেসে গিয়েছিস।
বাবা বাদশাহ্ কোথায়?
বাদশার বেডে!
মালা দৌড়ে বাদশার বেডে গিয়ে দেখে, ফাতেমা বাদশার বুকে শুয়ে আছে। মুখে অক্সিজেন মাক্স লাগানো। শরীরে স্যালাইন যাচ্ছে। মালা বাদশার কপালে চুমু দিয়ে বাদশার পা ধরে কাঁদতে লাগল। প্লিজ তুমি আমাকে ছেড়ে দিয়ো না, কিভাবো বাঁচবো তোমায় ছাড়া। তুমি যে আমার জীবন। তুমি যে আমার ভালবাসা।
প্লিজ ম্যাডাম এভাবে কাঁদবেন না! পেশেন্ট এর সমস্যা হবে পারলে আল্লাহ্কে ডাকেন। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে, রাত ১ টা বাজে। মালা দু'রাকাত নফল নামায শেষ করে, মোনাজাতে দুটি হাত উত্তোলন করে বলতে লাগল" হে পরম করুণাময় আল্লাহ্ তায়ালা, রহিম রহমান। এই শেষ রাতে পৃথিবীর সকল মানুষ যখন ঘুমন্ত এমন সময় তোমার পবিত্র দরবারে দু'টি হাত তুলে ধরেছি! ছোটকালেই মা -বাবাকে হারিয়েছি, বাবার স্নেহ কি জিনিস কখনো তা পায়নি। পায়নি মায়ের ভালবাসা। একমাএ অবলম্বন স্বামী। আজ আমার স্বামীর জীবন ভিক্ষা চাই তোমার দরবারে। হে আল্লাহ্ ফকির এক দরজার ভিক্ষা না পেলে অন্য দরজার যায়। আর তুমি ছাড়া তো আমার কোন দরজা নাই, এই ভিক্ষারিণীকে তুমি খালি হাতে ফিরাইওনা। আমি কিছু চায়নি কোনদিন তোমার দরবারে। কোনদিন বলেনি বা অভিযোগ করেনি মা-বাবাকে কেন কেড়ে নিলে। আল্লাহ্ তোমার কাছে আমার স্বামীর জীবন ভিক্ষা চাই। আল্লাহ্ আমার জীবনের বদৌলতে হলেও আমার স্বামীকে বাঁচিয়ে দাও। আমার মেয়েকে তুমি বাবা হারা করো না। আল্লাহ্ সন্তান কাঁদলে নাকি মা সহ্য করতে পারে না! ওহ্ আল্লাহ্ তুমি তো দুনিয়ার মায়ের চেয়ে তোমার বান্দা -বান্দীকে লক্ষ কোটিগুণ বেশি ভালোবাসো। আল্লাহ্ এই নিশীরাতে তুমি কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছো না? আমার স্বামীকে সুস্থ করে দাও হে আল্লাহ্। আমার বেঁচে থাকার অবলম্বনকে আমার কাছ থেকে দূরে সরিয়ে দিয়ো না। নিশ্চয়ই তোমার গোনাহ্গার বান্দীর দোয়া কবুল করেছে। এই কথা বলে মোনাজাত শেষ করে জায়নামাযেই ঘুমিয়ে গেল। (মালা)
ফজরের আজান শুনে মালার ঘুম ভেঙে যায়। মালা ফজরের নামাজ পড়ে দৌড়ে যায় বাদশার বেডে। মালা গিয়ে দেখে বাদশার অক্সিজেন মাক্স খোলা, ডাক্তার এসে বললো বাদশাহ্ আর ফিরবে না। কথাটা বলেই ডাক্তার চলে গেল।
মালা চিল্লায়ে কাঁদছে! না আমার বাদশাহ্ আমাকে ছেড়ে কোথাও যেতে পারে না। বাদশার পা দুটি জড়িয়ে ধরে বলতে লাগলো, তুমি আমাকে ছেড়ে যেয়ো না আমি সত্যিই তোমাকে ছাড়া বাঁচবো না। তোমার বুকই যে আমার শেষ ঠিকানা। প্লিজ কথা বলো, চুপ করে থেকো না। মালা বাদশার পা জড়িয়ে ধরে কাঁদছে!
মালা কাঁদতে কাঁদতে বাদশার কপালে গিয়ে ভালবাসার স্পর্শ এঁকে দিল। এদিকে কে যেন, মালাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরল। মালা চেয়েই দেখে বাদশাহ্ আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরেছে মালার কানে হালকা করে কামড় দিয়ে বলছে।
এই পাগলী কি হয়েছে কাঁদো কেনো
আমি কি আমার পিচ্চি বউটাকে রেখে মরতে পারি? আমি যে আমার পিচ্চি পরীটাকে বড্ড বেশি ভালোবাসি। আমার পিচ্চিটাকে কী জড়িয়ে ধরতে পারি?
মালা অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল বাধদশার আর মুখের দিকে আর ভাবছে আমিকি স্বপ্নে দেখতেছি বাদশাহ্ কথাটা বলে, বাদশার বুকে মুখ লুকালো। এই কি করছো তোমার চোখের পানিতে শার্ট তো ভিজে গেল। ভিজুক কেন কষ্ট দিলে আমায়। ( মালা)
তুমি ও তো আমাকে কম কষ্ট দাওনি, পাঁচবছর পাবনা পাগলা গারদে তোমাকে ছাড়া কাটিয়েছি। তাই আমিও ডাক্তারকে সব কিছু বলে ডাক্তারের সাথে প্ল্যান করে এসব করেছি। তবে একসিডেন্ট সত্যি সত্যি হয়েছিল। আচ্ছা সত্যিই যদি আমি হারিয়ে যেতাম?
মালা আমার মুখে হাত দিয়ে ফেলল। কি বলছো, তাহলে আমার কি হবে। এখনো তো বাসর রাত বাকী! আর এখন আর আমি কিন্তু পিচ্চি না। .
মালাকে জরিয়ে ধরে চুমু খেয়ে বললাম মালা তুমি কিভাবে বেঁচে গেলে আমি তো নিজ হাতে তোমাকে দাফন করলাম তাহলে সে কে...
তুমি যাকে দফন করেছ সে আমার আমার ছোট বোন মরিয়ম সেদিন আমি গাড়ি থেকে নামার পর সবুজ ভাইয়ের সামনে পরলাম সবুজ ভাই আমাকে দেখে চিনেফেলে বলে তোমার নাম মালা আমি অবাক হয়ে গেলাম আপনি আমার নাম জানেন কেমনে তুই ছোট বেলায় হারিয়ে যাওয়া আমার বোন মালা আমি তর ভাই সবুজ
একথা বলতেই রাস্তার ঐ পাশে হঠাৎ বিকট শব্দের আওয়াজ একটি মেয়ের উপর দিয়ে গাড়ি চাপা দিয়ে চলে যায় ভাইয়া আর আমি দৌড়ে যাই ভাইয়া মেটাকে ধরে কান্না করছে আর বলছে মরিয়ম কথা বল আমি বললাম ভাইয়া মেয়েটা কে ভাইয়া বললো আমার বোন মরিয়ম তর ছোট তোকে হত্যা করার জন্য সাথী নামের একটা মেয়ে আমাকে আর আমার বন্ধু রাশেদকে ভাড়া করে কিন্তু আমি তো জানতাম না যে তুই আমার হারিয়ে যাওয়া বোন মালা ঐ দিক থেকে গাড়ি নিয়ে আসছিল আমার বন্ধু রাশেদ তোকে বেভে মরিয়মের উপুর গাড়ি উঠিয়ে দিয়ে চলে যায় রাশেদ তর চেহারা আর মরিয়মের চেহারা একই রকম তার পর ভাইয়া মরিয়মকে মালা বানিয়ে তোমাদের বাড়িতে পাঠায় আর আমাকে তার সাথে আমাদের বাড়িতে নিয়ে যায় আর আমাকে সবাই মরিয়ম নামেই ডাকতো কথাগুলো কাঁদতে কাঁদতে বললো( মালা)
আচ্ছা মালা ফাতেমাকে কোথায় পেলে আমি তো তোমাকে পিল খাইয়ে ছিলাম ।
হে আমি খেয়েছিলাম কিন্তু সেটা ছিল মেয়াদ উত্তীর্ণ তাই বাচ্চা নষ্ট হয় নি আর সেটাই ছিল ফাতেমা
মালাকে জরিয়ে ধরে চুমু খেয়ে বললাম
মালা তুমি আমাকে খমা করে দাও
পর দিন
বাবা, মা, ফাতেমা ও মালাকে নি বাড়ি ফিরে আসলাম।
আজ আমাদের বাসর রাত
হারিয়ে গেলাম দুজন শুখের রাজ্যে ❤️❤️
"" "" "" "" সমাপ্তি"" "" "" "
সবাই ভালো থাকবেন আল্লাহাফেজ
www.golpobook.tk
বিঃদ্রঃ ভুলক্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।
1 মন্তব্যসমূহ
Very very nice
উত্তরমুছুনগল্প গুলো কেমন লাগলো, আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করুন।