মামাতো বোন। পর্ব- ১৮ শেষ


মামাতো বোন

পর্ব- ১৮  শেষ
.
দৌড়ে গিয়ে আশিককে জরিয়ে ধরলো।আশিক অবাক হয়ে দেখলো মুন কান্না ভরা চোখে জরিয়ে আছে😭।চোখের কোনায় জল খেলা করছে😢।এর অর্থ বুঝতে ব্যর্থ হলো আশিক😩। হঠাৎ করে অভিমান থেকে চোখে জল? 😞😞😞এর ব্যাখা খুঁজতে লাগলো।
মুন আশিককে শক্ত করে ধরে আছে। চোখ দিয়ে অনর্গল পানি ঝড়ছে।😭😭
.
আশিকঃ এই পাগলি।কাঁদো কেন?😩😩
মুনঃ তুমি পঁচা। খুব পঁচা।😢😢(কান্না করে)
আশিকঃ প্লিজ এভাবে কেঁদো না।কষ্ট হয় আমার😢😢।
মুনঃ হোক।তুমি আমায় শুধু শুধু কষ্ট দাও কেন😬😢😢😢?
আশিকঃ সরি।বুঝতে পারিনি এমনটা ঘটবে😩😨।
মুনঃ তুমি আমার মান না ভেঙে দাঁড়িয়ে আছো কেন? আমার সাথে যাও নি কেন?(রেগে)😠😠😠😠😠😠
আশিকঃ তুমি তো আমার কোন কথাই শুনছো না। তো কি করতাম।😢
মুনঃ কি করতা মানে? আমি যে ভাবে তোমার রাগ ভাঙ্গিয়ে দেই, সে ভাবে দিবে।😠😠😠😠😠😠
আশিকঃ কিভাবে ভাঙ্গাতে পারবো তোমার অভিমান?😯
মুনঃ তোমায় জড়িয়ে ধরে কিস করি।তেমনভাবে তুমিও করো।😂😂😂😃
.
আশিক জড়িয়ে থাকা অবস্থায় মুনের কপালে কিস করলো।
আশিকঃ এবার খুশি তো?😃
মুনঃ উহু।ঠোঁটে💋 দাও।(শয়তানি হাসি হেসে)😅😅😅😅
আশিকঃ না এসব এখন আর না।বিয়ের পর যা করার কর...😩
.
পুরোটা শেষ করার আগে আশিকের ঠোঁট বন্ধ করে দিলো। কিস করেই দৌড়ে চলে গেলো রিসোর্টে।আশিক হাদার মতো দাড়িয়ে আছে😦।আগে তো এমন ছিলো না মুন? হঠাৎ করে এসব করছে কিভাবে? এখনও বিয়ে হয়নি।তার আগে সব লুটিয়ে নিচ্ছে।যদি বিয়ে হয়ে যায় তাহলে তো কিছুই থাকবে না। এখনই সবার সামনে যা করছে বিয়ের পর তো পুরোপুরি মুনের হয়ে যাবে।তখন না যানি কি করে বসে।😢😢😢


বিকেলে নদীর তীর দিয়ে একা চলতে ভালোই লাগে।যদি দুজন হয়, আবার সেই মানুষটি হবু হাসবেন্ড হয়ে থাকে তাহলে তো কোন কথাই নেই😃।
মুন আর আশিক দুজনে সমুদ্রের তীরে হাত ধরে হেঁটে পথ চলছে।কোন অজানা যায়গায় যেতে ইচ্ছে করছে।দুজন পাশাপাশি একত্রে হাতে হাত রেখে নতুন কিছু মূহুর্ত আবিষ্কার করার ইচ্ছে পোষণ করছে।কিন্তু এলাকা টা চেনা। কোন কিছুই অচেনা নয়।😢তারপরও অনেক ভালো লাগছে। দুজনে পাশাপাশি অজানা রেখা দিয়ে চলছে। চলতেই থাকবে। মান অভিমান সব ভেঙ্গে, আজীবন একত্রে এভাবে হাতে হাত রেখে চলার দৃঢ় সংকল্প করেছে। ছেড়ে দেওয়ার কোন প্রশ্ন-ই উঠে না।

চলতে চলতে সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসলো। রক্তিম সুর্যটাও 🌞তার নিজ রং ধারণ করলো। এমন গোধূলির আলোয় চমৎকার দৃশ্য উপভোগের করছে তারা। সমুদ্র যেন লালবর্ণের রূপ ধারণ করলো। সূর্যের প্রতিফলন পুরো সমুদ্রকে নিজের রূপ বলে মনে হচ্ছে। বেশ রোমাঞ্চকর মূহুর্ত গড়ে উঠলো।এমন মুহূর্ত কে বা মিস করতে চাই। যদি পাশে প্রিয়জন সাথে থাকে তাহলে তো কোন কথাই নেই। তাদের কাছে শ্রেষ্ঠ মুহূর্ত হয়ে উঠে।
আশিকের কাঁধে মাথা রেখে এই রোমাঞ্চকর মূহুর্ত উপভোগ করতে লাগলো মুন।দুর থেকে সুর্য বিলীন হতে দেখছে।সন্ধ্যা নামতেই চারপাশ অন্ধকার হতে লাগলো। এখানে থাকা নিরাপদ নয়।যখন-তখন কিছু ঘটতে পারে।একটু বেশি দুরে চলে গেছিলো তারা। সবাই ফিরে যাচ্ছে আপন গন্তব্যে। সন্ধ্যার পর এখানে ভিড় কমই জমে।বিপদ হতে পারে এই ভয়ে।কেউ তো আর ইচ্ছে করে নিজের বিপদ বাড়তে চাইবে না।টুরিস্ট হয়ে এসে নিজের লাইফ রিক্স কে বা নিতে চাইবে?😢
রিসোর্টে কাছে এসে মুন থেমে গেলো।
.
আশিকঃ কি হলো? এখানে থামলা যে?😮
মুনঃ কাল রাতে আমায় কি ভাবে নিয়ে গেছিলে😄?
আশিকঃ  কেন??কোলে করে।😦
মুনঃ আজকেও নিয়ে যেতে হবে।😂
আশিকঃ কি বলো এসব?আজ কেন নিয়ে যাবো😱😱?
মুনঃ কাল কেন নিয়ে গেছিলো?😠
আশিকঃ কাল তো তুমি অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলে।😩
মুনঃ আজকেও নিয়ে যেতে হবে।😀😀
আশিকঃ লোকে কি ভাববে? তাছাড়া আজ তো তুমি ঠিক আছো।😨
মুনঃ আমি কোন কথা শুনবো না।কোলে করে নিয়ে যাবে ব্যস।😂😠
আশিকঃ জিদ ধরো না। বৃষ্টি নামবে এখন।☔☁
মুনঃ আমি কিছু জানি না।তুমি নিয়ে গেলে যাবো।না হলে বৃষ্টিতে ভিজবো।☔☔
.
.
বলতে না বলতেই বৃষ্টি শুরু হলো।গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি পড়তে লাগলো। এখনই মুষলধারে বৃষ্টি পড়তে শুরু করবে।
আশিকঃ ভিজে যাচ্ছি তো আসো।😒
মুনঃ....😠😠
আশিক বুঝে গেলো ভিজলে ভিজবে।তবুও এক পা ও যাবে না।আশিক উপায় না পেয়ে মুনকে কোনে নিলো।মুন আশিককে শক্ত করে ধরে রাখলো। রিসোর্টে গিয়ে পৌছানোর আগেই বৃষ্টি নেমে পড়েছে।তাই ভিজতে হলো দুজনকেই। তবে পুরোটা ভিজেনি।
.
আশিকঃ নামবে না?
মুনঃ উহু।রুমে নিয়ে চলো।😂
আশিকঃ না বাবা পারবো না।এখান থেকে হেঁটেই যাবে।😦
মুনঃ তা তো হবে না মিস্টার।আমি ছাড়ছি না।😂😂

আশিককে আরো শক্ত করে জরিয়ে ধরলো। আশিক উপায় না পেয়ে সিঁড়ি দিয়ে উঠতে লাগলো। আজকে একটু অসুবিধায় হচ্ছে। কালকে মুন অজ্ঞান ছিলো তাই এতোটা অসুবিধা হয়নি।কিন্তু আজ মুন সচেতন আছে। আশিকের সাথে দুষ্টামি করতে লাগলো।তাই একটু অসুবিধা হতে লাগলো। তারপরও আশিক একদম মুনের বিছানায় নামিয়ে দিলো।কিন্তু আশিক ছাড়া পেলো না। কাল কে অজ্ঞান অবস্থায় জড়িয়ে ছিলো আর আজ নিজ ইচ্ছেয়।😂😂
.
.
আশিকঃ ছাড়ো না। এভাবে থাকতে আনইজি লাগছে।😩
মুনঃ এভাবে এখন থেকে থাকতে হবে।(টেনে নিজের সাথে জড়িয়ে ধরলো)😂😃
আশিকঃ এই এই।এটা কি হচ্ছে। ছাড়ো।কেউ দেখলে কি ভাববে।😲
মুনঃ আমার বর কে জরিয়ে আছি।তাতে অন্য রা বলার কে?😃😄
আশিকঃ এখান হয়নি।যখন হবো তখন জড়িয়ে রেখো।😑
মুনঃ না।এভাবে তোমায় সাথে নিয়ে থাকবো।(আশিকের দিকে ঝুকে)😄😄😍
.
আশিক বুঝতে পেরে মুন কে ছাড়িয়ে দ্রুত রুম ত্যাগ করলো।মুন যে দিনদিন কতো বড় মাপের নির্লজ্জ হচ্ছে সেটা বুঝতে পারছে আশিক। কোথায় কি করা উচিৎ মুনের সেই বিষয়ের জ্ঞান যেন লোপ পেতে লাগলো। মুনকে নিয়ে একসাথে ঘোরাফেরাটা যেন আশিকের জন্য বিপদজনক মনে হচ্ছে। এখনো সম্পুর্ন অধিকার নেই মুনের।তারপরও যা যা করে, পুরোপুরি অধিকার পেলে তো সব বুদ্ধি লোপ পাবে।
আশিক এভাবে দ্রুত চলে যাওয়াটা দেখে মুন মুচকি মুচকি হাসতে লাগলো😄😄। পুরো ভয়ে ছিলো আশিক।একবার যদি কন্ট্রোল হারিয়ে ফেলে তাহলে বিপদ বাড়তে পারে। তাই মুনকে বারবার সরিয়ে দেয়। যা হওয়ার বিয়ের পরই হবে।
মুন আশিককে এতো কিছু করতে চাই না।তবুও কেন জানি এভাবে আশিকের মায়ায় পড়ে নিজের প্রতি কন্ট্রোল হারে ফেলে। মুন আশিককে নিজের পাশে সবসময়ই চাই।সবসময় আশিকের বুকে মাথা রাখতে চায়।
রাতে আশিক মুনকে তেমন সুযোগ দেয়নি।বেশি সুযোগ দিলে কি না কি করে বসবে এই ভয়ে। আশিক বিয়ের আগে কোন রিক্স নিতে চায় না।
 শুধু ডিনারের পর কয়েক ⌚মিনিট কথা হয় তাদের। এই কয়েক মিনিটের ভেতরেই মুন নিজেই পাওনা বুঝে নিয়েছে😂।আরও কিছুক্ষণ আশিকের সাথে থাকতে চেয়েছিলো, কিন্তু পারলো না। আশিক অজুহাত দেখিয়ে চলে গেলো। মুনেরও বুঝতে কষ্ট হলো না আশিকের কেন এই অজুহাত। মন খারাপ হলেও হাসিও পাচ্ছে আশিকের অবস্থা দেখে😂।
পরের দিন যে যার মতো করে বেড়িয়ে গেলো। অবশ্য যাবতীয় খরচ কোম্পানিরই।🏢
শফিক আর মিলি এই কয়েকদিনে দারুণ মূহুর্ত কাটাতে লাগলো। যেমনটা প্রেমিক-প্রেমিকারা কাটায়। সারাক্ষণ কথা বলা,একসাথে প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করা, রোমান্স, সব মিলিয়ে স্মৃতিময় মুহূর্তগুলো ফ্রেমবন্দী করে রেখেছে । ভালোবাসার মানুষ যদি সাথে থাকে তাহলে প্রতিটি মিনিট, প্রতিটি সেকেন্ড রোমাঞ্চকর হয়ে ওঠে⌚।

মুন আর আশিক আজ দূরে কোথাও যাবে না। কালকের অসমাপ্ত পথ আজ সমাপ্ত করবে। যদিও পথ কোন দিনও সমাপ্ত হয় না।ভালোবাসার একটি নির্দিষ্ট পথ আছে। যার পরিমাপ দু ভাবে করা যায়। ভালোবাসার পথ অতিক্রম করলেই বেহায়াপনার পথ শুরু হয়। যার পরিনতি একজন অবৈধ, নবাগত শিশুর মৃত্যু।
.
তারা চাইও না ভালোবাসার পথ যেন কোন রকমভাবে অতিক্রম না হয়।এই পথ দিয়ে সারাজীবন একসাথে একত্রে চলবে।যতদিন পারবে একসাথে হাতে হাত রেখে বাঁচবে।শুধু ভালোবাসা দিয়ে তারা নিজেদের পথ চলার সীমারেখা দীর্ঘ করবে।


আজকে মুন স্বাভাবিকই আছে।কোন রকম ব্যতিক্রম আচরণ করছে না। আশিকের হাতে হাত রেখে চলছে অসমাপ্ত পথ সমপ্তের উদ্দেশ্যে।আজকে আশিকের কথা মতোই চলতে লাগলো।যেন আশিকের বাধ্য স্ত্রী।কোন অভিযোগ করছে না আজ। কোন অভিযোগও নেই তার কাছে।দুদিন পর তো পুরোপুরি আশিকের অধিকারে থাকবে। এখন থেকে না-হয় আশিকের নিয়মেই চলুক।
চলতে লাগলো বাকি পথ টুকু। সব কাঁপলদের মধ্যে তারাও অন্যতম কাঁপল💑।মধুর খুনসুটি, রোমান্সের মধ্যে দিয়ে ঘুড়তে লাগলো। দুপুরে লান্স করে ফিরে আসলো রিসোর্টে। আজ অন্য রকম লাগছে মুনকে।৭ বছর আগে যেমন ছিলো আজও তেমন আচরণ করলো। আশিকের সাথে করা কালকের আচরণের সাথে আজকের আচরণের ফারাক দেখা দিচ্ছে।আশিক তো রীতিমতো অবাক হয়ে গেলো। কালকে কতো কি করার বায়না করছিলো।আর আজকে লজ্জায় লজ্জাবতী হয়ে গেছে। মেয়েদের বুঝতে কতোটা পরিশ্রম করতে হবে সেটা বুঝে গেলো। কঠোর পরিশ্রম করলেও তো বুঝতে পারবে না সেটা নিমিষেই বুঝে গেলো।


বিকালে মুন আশিকের রুমে গিয়েই বললো,
মুনঃ আশিক চল।
আশিকঃ কোথায় যাবো?(অবাক হয়ে)😱
মুনঃ আমার সাথে গেলেই বুঝতে পারবা😂।
আশিকঃ কোথায় যাবো? সেটা তো বলবা।😵
মুনঃ যাবে কি না সেটা বলো?(রেগে)😠
আশিকঃ হু যাবো।তো।😢
মুনঃ হুম।চলে আসো। তোমাকে  কিডন্যাপ করবো না।😀
আশিকঃ হৃদয় তো কিডন্যাপ করেইছো।আমাকে করে কি আর পাবে।😂
মুনঃ হুম।ভালো করেছি।এবার চল।😃
.
.
মুন আর আশিক চলতে লাগলো শপিং করতে। বিয়ের সব জিনিসপত্র কিনতে হবে তো? আশিকের পছন্দ মতোই সব কিছুই পড়বে।আর নিজের পছন্দের সব আশিককে পড়তে হবে।এটাই হবে বিয়ের সবচেয়ে বড় গিফট তাদের কাছে।কেনা কাটা করে রাতে ফিরে আসলো। অনেক কষ্ট মুনের জন্য লাল লেহেঙ্গা চুজ করলো। বিয়ে বলে কথা। বিয়ের দিন তো লাল পোশাকে দারুণ দেখায় কনে'কে। আশিকের জন্য মুন কালো স্যুট কোট নিলো। আশিককে দারুন লাগবে এই পোশাকে। এমনিতেই একটু ফর্সা। তাতে কালো ড্রেস-আপে দারুন লাগবে। হ্যান্ডসাম তো লাগবে অনেক।
শপিং শেষে আশিককে গাড়িতে রেখে মুন বাইরে গেলো।আশিক জিজ্ঞেস করাতে বলে কাজ আছে একটু। সেড়ে আসবে। আশিক সাথে যেতে চাইলে কঠোর কণ্ঠে না করে দেয়। তাকে ৫ মিনিট অপেক্ষা করতে বললো।আশিক আর কোন কথা বাড়ালো না। মাত্র ৫ টা মিনিটেই তো।
কিছুক্ষণ পর মুন কাজ শেষে ফিরলো।তারা দুজনে রিসোর্টের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিলো।
.
.
সকাল ৮ টাই রওনা 🚌দিলো ঢাকার উদ্দেশ্যে।কথা ছিলো ১০ টায় যাবে। কিন্তু মুন হঠাত করে ২ ঘন্টা আগেই জানিয়ে দিলো তারা ৮ টাই ফিরবে। মুনের উপর দিয়ে কারো কথা বলার সাহস নাই। তাই সমস্যা থাকলেও কিছু করার নেই কারো।


২টার পর ফিরলো তারা।যে যার মতো চলে গেলো।আশিকে বাসায় ড্রপ করে মুন চলে।আশিকের সাথে আগের মতো ব্যবহার করছে না।আগে যেমন আশিকের সাথে থাকতে চাইতো জোর করে।কিন্তু আজ আশিক একটু থাকতে বললো কিন্তু মুন রাজি হলো না।এতে আশিকের মুড অফ হয়ে গেলো।২ দিন থেকে মুনের স্বাভাবিক আচরণ যেন আশিকের ভালো লাগছে না।আগেই ঠিক ছিলো।কতো দুষ্টামি করতো মুন।কিন্তু আজ নিরব।
.
রাত পর্যন্ত মুনের কোন খবর নেই। আগে তো কতো ফোন করে জ্বালাতো।
হঠাৎ করেই আশিকের কাছে চলে আসলো।কিন্তু আজ মুন কোন খবরই নিলো না।আশিক রেগে ঘুমিয়ে গেলো।মুনের এই আচরণ টা যেন আশিকের জন্য কষ্টদায়ক😢😢😢। কিভাবে মুন পারলো এমন করতে।


পরের দিন অফিস বন্ধ ছিলো।তাই সকালে অ্যালার্ম দিতে হয়নি।সারাদিন ঘুমিয়ে কাটাতে চাই।  কেউ যাতে ডিস্টার্ব না করে তাই ফোন অফ করে রাখছে। কিন্তু সেটা কারো সহ্য হলো না। ফোন অফ তাতে কি কলিং বেলের 🔔আওয়াজে আশিকের ঘুম ভাঙ্গতে বাধ্য হলো। অনর্গল বেলের আওয়াজ পেয়ে মনে হলো সেদিন কিভাবে তাকে মুন কিডন্যাপ করেছিলো।কিন্তু একই ভাবে বেল বাজছে। আশিক বুঝতে পারলো না। দরজা খুলতেই অজ্ঞান হয়ে গেলো। কাউ চেতনানাশক মেডিসিন দিয়ে অজ্ঞান করে দিয়েছে।
জ্ঞান ফিরে পেয়ে দেখতে পেলো সোহানা রাফি ওর সামনে বসে আছে।
.

আশিকঃ তোরা এখানে?😱
সোহানাঃ আসতে পারি না নাকি?(😆রহস্য হাসি হেসে)
আশিকঃ হ্যাঁ পারবি না কেন?হঠাৎ করে আসলি তো।কিন্তু আমাকে এভাবে নিয়ে আসার কি দরকার ছিল?😵😳
রাফিঃ একটু পরই বুঝতে পারবে।😅😅
সোহানাঃ এখন যা গোসল সেরে আয়😂।
আশিকঃ ঐ তাহলে পরমু কি? কিছু তো নিয়ে আসি নি।😢
সোহানাঃ সেটা নিয়ে তোরে চিন্তা করতে হবে না।
রাফিঃ আমার সাথে আসো।আমি সব দিচ্ছি😁।
আশিক রাফির দেওয়া কাপড় নিয়ে ফ্রেশ হয়ে আসলো।আশিক মাথায় অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে।মুনের ব্যবহার করা পদ্ধতি সোহানা ব্যবহার করলো কিভাবে? কে কিডন্যাপ করছে সেটাও তো দেখতে পারলো না। দেখলে হয়তো এই সব প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যেতো।ফ্রেশ হয়ে চলে আসলো।সাথে একগাদা প্রশ্নের উত্তর নেয়ার জন্য প্রস্তুত নিচ্ছে।কিন্তু সেই সুযোগ আসে নি।তার আগে সোহানা আর রাফি জোর করে খাইয়ে দিলো।
কিন্তু কিছু ক্ষন পর শফিক আর মিলিকে আসতে দেখে অবাক হয়ে গেলো😱😱। ওরা এখানে কেন সেটা জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে সোহানার দিকে তাকালো
.

সোহানাঃ এতো চাপ নিতে হবে না।সব বুঝতে পারবি।😁
শফিকঃ যদি সব হয়ে যায় আপনাদের তো আমরা এখন আমাদের কাজ করতে পারি।😂😂
আশিকঃ কিসের কাজ?😱😱
সোহানাঃ হ্যাঁ হ্যাঁ আমাদের কাজ শেষ। এবার তোমাদের টা শুরু করো।😂😂
.
আশিক কিছু বলতে যাবে তার আগে জোর করে রাফি আর শফিক আশিককে নিয়ে রুমের ভিতর ঢুকলো।
সোহানাঃ আমার বেস্টুরে যেন সুন্দর ভাবে সাজানো হয়।না হলে কিন্তু তোমাদের খবর আছে।😠
রাফিঃ তোমাকে ভাবতে হবে না।আমরা এমন ভাবে সাজিয়ে দিবো দেখবা সব মেয়ে তোমার বন্ধু কে দেখে ক্রাশ খেয়ে যাবে।😃😄
সোহানাঃ হুম তাহলে তো ভালোই।😕
.
আশিক সবার কথা শুনে বোকা বনে গেলো। কি হতে চলেছে সেটা বুঝতে পারছে না।
শফিক যখন ব্যাগ থেকে ড্রেস গুলো বাহির করলো তখন তো আশিকের মাথা ঘুরতে লাগলো। এগুলো তো কক্সবাজারে কিনেছিলো। বিয়ের জন্য। মুন পছন্দ করে দিয়েছে।
আশিকঃ এগুলো এখানে কেন?
শফিকঃ ঢং করতে হবে না। আপনি জানেন এগুলা কেন কিনেছিলেন?😡
আশিকঃ জানি।কিন্তু আজকে কেন?😲
রাফিঃ আগে পড়ে নেন।তারপর বলতেছি।
আশিকঃ কি হচ্ছে আমার সাথে।😑
রাফিঃ ধুর মিঞা।তাড়াতাড়ি তৈরি হয়ে নেও। নাহলে আমার কপালে ভাত নাই।তোমার বন্ধু আমারে মাইরা ফালাইবো।😂😂
আশিক ধমক খেয়ে চুপচাপ তৈরি হয়ে গেলো।বুঝতে অসুবিধা হলো না আজ কেন সাজানো হচ্ছে।মুন নিশ্চয় কিছু একটা করে বসেছে।তাই আজকে বিয়ে হবে।কিন্তু না জানিয়ে বিয়ে করবে তা তো সে মানতে পারছে না।হঠাৎ করে কেন? একবার তো জানাতে পারতো? কিডন্যাপ টা কে করিয়েছে সেটা বুঝতে দেরি হলো না আশিকের।
আশিককে সাজিয়ে সবাই চললো বাড়ির উদ্দেশ্যে। মুন কালকে সোহানা আর রাফিকে ঢাকায় পাঠিয়েছে। আশিককে জানিয় নি।সারপ্রাইজ দিতে চেয়েছিলো মুন।তাই আশিককে রেখে প্লান করে মুন।সেই প্লান অনুযায়ী কাজ করছে সোহানা,রাফি, শফিক আর মিলি। ছেলে পক্ষ থেকে মানে আশিকের পক্ষে এরা চারজন সহ আশিকের ছোট মামা মামি আর নানী রয়েছে। 😄
.
.
আশিক ৭ বছর পর বাসায় প্রথম পা রাখছে আজ।এর আগে কখনো আসেনি। কিন্তু আজকে এসেই বড় ধরনের ধাক্কা খেলো। তাদের ছোট্ট বাসাটা এখনো আছে। আর খুব সুন্দর করে সাজানো হয়েছে।পাশাপাশি দুইটা বাসায় সাজানো হয়েছে। কিন্তু আশিকের বাসা টা দারুণ ভাবে সাজিয়েছে। আশিক ধারণা ভুল আবারো প্রমানিত হলো।ওর বাবা মায়ের স্মৃতি খুব যত্ন করে রেখে দিয়েছে তারা। আশিককে নিয়ে বাসায় নিয়ে যাওয়া হলো।ওখানেই বিয়ের কাজ সেরে ফেললো।এটা অবশ্য আশিকের মায়ের ইচ্ছা তার একমাত্র ছেলেকে নিজের বাসা থেকেই বিয়ে দিবে।সবাই খুশি হয়ে তাদের মিলিয়ে দিলো।কিন্তু আশিক রেগে আছে মুনের উপর😠😠।কেন তাকে জানিয়ে দেওয়া হলো না।


আজ তাদের বাসর রাত।কিন্তু আশিক যাচাই না রুমে। শফিক , রাফি জোড় করে আশিককে পাঠিয়ে দিলো মুনের কাছে। আশিক আস্তে আস্তে মুনের সামনে গেলো। তবে ভয়ে নয়।রেগে। 😠😠😠আশিককে দেখে মুন চোখ লাল🔥 করে বললো এই
মুনঃ তোর সময় হলো আসার?
আশিকঃ ভাবছিলাম তো আসবোই না।
মুনঃ আমি তোর বউ।আমার কাছে আসবি না কেন হ্যাঁ।😠
আশিকঃ আজকে এভাবে বিয়ে করার মানে কি😬?
মুনঃ আমার জানটাকে সারপ্রাইজ দিবো বলে। জানিয়ে দেই নি।😩
আশিকঃ তাই বলে হঠাৎ করে?😡
মুনঃ হুম।তোমাকে পাওয়ার জন্য সবই করতে পারবো গো।
আশিকঃ হু।তোমার সাথে কোন কথায় নাই😠😢।(রেগে)
মুনঃ উলে বাবুরে রাগ করে না আমার লক্ষীটি😁😁।
আশিকঃ হুহ।যাও তো।😡
মুনঃ আমার জানটা খুব রাগ করেছে😊?(জড়িয়ে ধরে)
আশিকঃ আমি কারো জান না।😠
মুনঃ সরি বাবু।রাগ করে না।😘😘
আশিকঃ তুমি আমায় কাল থেকে একবারও ফোন দাও নি কেন?(রেগে)😠
মুনঃ আমাকেই সবসময় দিতে হবে😢? তুমিও তো দাও নি আমায়। জানো কত রাত পর্যন্ত তোমার ফোনের জন্য অপেক্ষা করেছি। একটি বারও তো ফোন দাও না তুমি।যখন ফোন দিলাম তখনই বন্ধ পেলাম।কতটা কষ্ট পেয়েছিলাম😭😭।(কান্না করতে করতে)
.
আশিক নিজেই অবাক হয়ে গেলো।মুন তো খারাপ কিছু বলে নি।সত্যি তো সে কখনো ✆ ফোন দেয়নি। সে তো মুনের কল না পেয়ে ফোন অফ করে ঘুমিয়ে গেছে।কিন্তু মুন ওর জন্য রাত জেগে ছিলো। ভুলটা তো তারই। শুধু শুধু মুনের উপর রেগে আছে😢😢।
আশিকঃ সরি।আমি বুঝতে পারিনি তুমি ফোন দিবা। তুমি একবারও ফোন দাওনি তাই ফোন অফ করে রেখেছিলাম।😢
মুনঃ সরি গো। আর কখনো এমন করবা না তো?😍😍
আশিকঃ না কখনো না।(শক্ত করে জরিয়ে)😍
মুনঃ হুম এখন ফ্রেশ হয়ে আসো।😃
আশিকঃ হুম।কিন্তু পড়বো কি?😲
মুনঃ আলমারিতে সব রাখা আছে।😂

আশিক এবার ঘরটা ভালো করে দেখতে লাগলো।গত ৭ বছর আগে এখানে ছিলো। আর আজকেও এখানেই আছে। কোন পরিবর্তন হয় নি।তবে আগের থেকে সাজানো-গোছানো। মুনের দিকে জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।😑
মুনঃ এখানে ৭ বছর ধরে আমি থাকি।সব কিছু আমিই দেখা শোনা করি।😂
আশিকঃ কিন্তু কেন?সবার থেকে আলাদা হয়ে?😶
মুনঃ তোমায় ভালোবাসি বলে। তোমার জন্য সব কিছুই নিজের করে নিয়েছি। সব স্মৃতি গুলো আগলিয়ে রাখতাম। তোমার স্মৃতি গুলো নিয়ে ফিরে আসার পথ চেয়ে থাকতাম প্রতিটি মুহূর্ত😩😢।
আশিকঃ যদি কখনো না আসতাম।
মুনঃ(মুচকি হেঁসে) এভাবে বাকি জীবনটা কাটিয়ে দিতাম।😄
আশিকঃ ভালোবাসো খুব আমায়।😢
মুনঃ নিজের থেকেও বেশি।😍
আশিকঃ ভালোবাসি তোমায়। অনেক অনেক ভালোবাসি। কখনো ছেড়ে যাবে না তো?😰
মুনঃ ছেড়ে যাওয়ার জন্য ভালোবাসি নি।😍😍
আশিক মুনকে জরিয়ে ধরে মুনের কপালে ভালোবাসার পরশ😘 এঁকে দিলো।
মুনঃ হয়ছে।এবার ফ্রেশ হয়ে আসো।
মুন আশিককে ঠেলে ওয়াশরুমে পাঠিয়ে দিলো। নিজেও ফ্রেশ হয় নিলো।
আশিকঃ এবার কি করবো।
মুনঃ বুঝতে পারছো না?😞
আশিকঃ না।তুমি বলো।(মুনকে জরিয়ে)😁
মুনঃ চলো আগে আমাদের সম্পর্ক টা দু রাকা'ত নামাজ দিয়ে শুরু করি।😃
আশিকঃ ঠিক বলেছো।😍

দুজনে দু রাকা'ত নফল নামাজ দিয়ে তাদের ভালোবাসার সম্পর্ক শুরু করল।
দুজনেই ভাসতে লাগলো ভালোবাসার মায়াজালে। শুরু হয়ে গেলো তাদের বিবাহিত জীবনের প্রথম ধাপ।হাজার কষ্ট ভেদ করে সুখময় জীবনে প্রবেশ করলো। হ্যাঁ করুক না তাদের ভালোবাসার সফলতার আনন্দ।এভাবে কাটিয়ে দিক সারাজীবন হাতে হাত রেখে।দু-জনের ভালোবাসার বন্ধন চলতেই থাকুক আজীবন।যেন এই সুখের বন্ধন কখোনও না ভেঙ্গে যায়,কোন কিছুর বিনিময়ে এই নির স্বার্থ ভালোবাসা। এই কামনায় করি।







💘💘💘💘💘💘💘💘💘💘💘💘💘💘💘সমাপ্ত💘💘💘💘💘💘💘💘💘💘💘💘💘💘💘



🔴গল্পের সমস্ত ঘটনা-চরিত্র কাল্পনিক।
ভুল-ত্রুটি গুলো ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।
💘
💘
💘
💘
্র্জ

🌟🌟ধন্যবাদ সবাইকে🌟🌟

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ