আমার পিচ্চি বউ পর্ব- ৫ । রোমান্টিক ভালোবাসার গল্প।


আমার পিচ্চি বউ
পর্ব--৫


আজ আমি অফিসে যায়নি। কেননা, আজ
অবনীর চলে যাবার দিন। আমি দেখতে চাই
ও আমাকে ফেলে কিভাবে যেতে পারে? আমার বিশ্বাস ছিল ও আমাকে ছেড়ে
কখনো যেতেই পারবেনা। কিন্তু ও আমার
বিশ্বাস ভেঙে দিয়ে চলে গেল।  ওর জন্য এ হৃদয়ে গড়ে
তোলা ভালোবাসার পাহারটাও ভেঙে
তছনছ করে চলেগেল। মানুষ যে এমনটা পারে
ওকে সামনে থেকে না দেখলে বুঝতাম না।
ওকে আমি আটকানোর চেষ্টা করিনি তা
কিন্তু নয়।

ও বলল আমি রাফি কে ছাড়া বাঁচবো না।
আমি চাই ও বেঁচে থাকুক। আমার সাথে
নাহোক রাফির সাথে তাতেই আমি খুশি।
তাই ওর চলে যাওয়ায় আমি আর বাধা হয়ে
দাঁড়ায় নি। ওর চলে যাওয়ার পথের দিকে
চেয়ে আছি। টুপটাপ করে অশ্রুজল গড়িয়ে
পড়ছে। আমি জোরে কান্না করতে
পারিনা। তবে আজ কেন জানি খুব জোরে,
জোরে কান্না করে দুহাত তুলে খোদার
কাছে, বলতে ইচ্ছে করছে। কেন এমনটা হল?
আমি শুধু কেবলা কান্তর মতো ওকে
ভালোবেসেই গিয়েছিলাম।
কখনো শুনতে চাইনি ও আমাকে
ভালোবাসে কিনা? আমার ধারণা ছিল,
হয়ত দুটোদিন পর সব ঠিক হয়ে যাবে। ও
আমাকে খুব ভালোবাসবে।


আমার ধারণা ভুল প্রমাণ করে দিয়ে চলে
গেল মেয়েটি। আজ আমার মতো আকাশেরও
হয়ত মন ভালোনেই। তাইতো কালো মেঘ
জমাট বেধেছে আকাশে। একটু পরেই বৃষ্টি
নামবে। আমি ভিজবো। আমার চোখের জল
গুলো বৃষ্টির জলের সাথে মিশেযাবে।
হটাৎই আমার পিছনে একজোড়া হাতের পরশ
অনুভব করলাম। সামনে তাকাতেই দেখি
আব্বু, আমার সাথে, সাথে আব্বুও কাঁদছেন।
হয়ত আব্বু অবনীকে নিজের মেয়ে হিসাবেই
ভালোবেসেছিলেন।


সেদিনই প্রথম আব্বুকে বুকে জড়িয়ে ধরে খুব
কেঁদেছিলাম। সারাদিন বৃষ্টিতে ভিজেও
ছিলাম। আমার খুব জ্বর এসেছিলো। আমি
জ্বরের ঘোরে বার বার অবনীকে
চাচ্ছিলাম। আজ ১সপ্তাহ হয়ে গেছে, অবনী
কাছে নেই। অবনীর দুষ্টামি গুলো বারবার
আমায় তাড়া করে বেড়াচ্ছে, মানুষ বলে
প্রিয় মানুষের স্মৃতি নিয়ে নাকি
বাকীটাজীবন কাটানো যায়? আমি
পারছিনা। ভিষন যন্ত্রণা হচ্ছে, বুকের
মাঝখানটায়।


এখনো আমি অফিসে যাওয়ার আগে সাদা
শার্টটা বিছানায় রেখে দেয়। কিন্তু কেউ
এসে আর চা ঢেলে দেয়না। এখন আর কেউ
মাঝরাত পর্যন্ত ফুটবল খেলার বায়না
ধরেনা। আচ্ছা সত্যিকারের কাউকে
ভালোবাসলে কি, শুধু কষ্টই পেতে হয়? যদি
উত্তর হয় 'না'। তবে আমি কেন পাচ্ছি?
বুকের বা পাশটা এভাবে যন্ত্রণায় বিষিয়ে
উঠছে কেন? অবনীর একটু কষ্ট হচ্ছেনা? ওর
কি আমাকে একটু মনে পড়ছে না? মনে পড়বে
কিভাবে, ওতো রাফির সাথে খুব ভালো
আছে। সুখে আছে।

যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছি তো সুধু আমি।
কেনো যে ওকে ভালোবাসতে গেলাম। ওকে
না ভালোবাসলে এতো কষ্ট বোধহয় পেতে
হতোনা।
আজ ১০টা রাত আমি ঘুমাতে পারিনা।
অবনী চলে যাবার পর থেকে সকালটাকে
আর সুন্দর মনে হয়না। খুব বিরক্ত লাগে। এই
১০দিনে অবনীর জন্য তিলেতিলে অনেক
অভিমান জমা হয়েছে। এই অভিমান গুলোই
হয়ত অবনীর প্রতি আমার ঘৃণা বাড়িয়ে
দিবে। আমিও সেটাই চায়। ওকে ঘৃণা করে
ভুলে থাকতে। এই পাষাণ হৃদয় নিয়ে আর
বেঁচে থাকা যায়না। মানুষ বলেনা।
তোমাকে ছাড়া আমি বাঁচবো না। পাগল
হয়েযাবো। মানুষ ভুল বলে। আমিতো বেঁচে
আছি।

আসলে মানুষ ওগুলো আবেগে বলে। আবেগ
কেটেগেলে মানুষ ঠিকি বেঁচে থাকে।
বেঁচে থাকতে হয়।
সে যদি আমাকে ছেড়ে ভালো থাকে আমি
কেন পাড়ব না? পাড়তে যে আমাকে হবেই।
ওকে দেখাতে হবে আমি ভালো আছি। ওর
ছেড়ে যাওয়াতে আমি দুমড়ে মুচড়ে যায়নি।
কিন্তু সত্যি বলতে কি এগুলো আমার
অভিমানের কথা। ওর চলে যাওয়াতে আমি
দুমড়ে মুচড়ে তছনছ হয়ে গেছি। শুধু আমার
আব্বুটার জন্য বেঁচে আছি।

সেই মা, চলে যাওয়ার পর বেচারা খুব ভেঙে
পড়েছিল। হয়ত আমার মুখের দিকে চেয়েই
নিজেকে শক্ত করে বেঁচেআছে। এরপর
অবনীও চলে গেল। এখন যদি আমিও চলে
যায়। আব্বুটাকে কে দেখবে? আব্বু যদি
নিচের পাহার সমান কষ্ট বুকে চেপে তার
সন্তানের মুখে হাসি দেখতে চায়।
তাহলে সন্তানহিসেবে আমারওতো উচিৎ
নিজের কষ্ট বুকে চেপে আব্বুর মুখে হাসি
ফোটানো।
চলবে......

ভুলত্রুটি ক্ষমা করবেন।

গল্প গুলো ভাল লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করবেন এবং শেয়ার করবেন।

আমার পিচ্চি বউ পর্ব ৬



একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ