ধর্ষক থেকে বর
পর্ব- ১৫+১৬
লামিয়া রাগের বসে খাবারের প্লেটটা ছুড়ে মাটিতে ফেলে দিল।খাবারের প্লেটটা
মাটিতে ফেলে দিতেই বিকোট একটা আওয়াজ হলো।আওয়াজটা শুনেই পাশের রুম থেকে আম্মু চলে আসলো।আম্মু এসে বললো:
.
-- কি রে কি হয়েছে?(আম্মু)
-- কিছু না আম্মু।
-- কিছু না মানে!তাহলে এতো
বিকোট শব্দ হলো কেন?
-- হাত থেকে খাবারের প্লেটটা
পড়ে গিয়েছে।
-- একটু সাবধানে কাজ করতে
পারিস না।
-- তুই গিয়ে খাবার নিয়ে আয়।
-- আমি লামিয়াকে খাইয়ে দিচ্ছি।
.
তারপর আমি সেখান থেকে খাবার রুমে চলে গেলাম।খাবার রুম থেকে অন্য একটা প্লেটে লামিয়ার জন্য খাবার নিয়ে আসলাম।আম্মু লামিয়াকে নিজ হাতে খাবার খাইয়ে দিল।রাতে ফোনটা রুমের ভিতর চার্জে দিয়ে খাবার খাওয়ার জন্য খাবার রুমে চলে আসলাম।এসে দেখি সবাই খাবার টেবিলে বসে আমার জন্য অপেক্ষা করছে।শুধুমাত্র লামিয়া ছাড়া।লামিয়ার অসুস্থতার জন্য আম্মু ওকে আগেই খাইয়ে দিয়ে এসেছে।আমি গিয়ে টেবিলে বসতেই আম্মু আমার জন্য প্লেটে খাবার বেড়ে দিল।আমি খাবার আঙ্গুল দিয়ে আওরাচ্ছি আর বসে বসে লামিয়ার আমার প্রতি জম্মানো ঋৃণার কথা ভাবছি।এমন সময় আমার ছোট বোন সোনিয়ার কথায় বাস্তবে ফিরলাম।
.
-- কিরে ভাইয়া তুই খাচ্ছিস না কেন?
-- কই খাচ্ছি তো।
-- শাকিল বউমার জ্বরের এখন
কি অবস্থা।(আব্বু)
-- পূর্বের থেকে একটু কমেছে আব্বু।
-- ঔষুধগুলো ঠিক মতো খাওয়াচ্ছিস তো।
-- হুম।
-- আচ্ছা এখন চুপ চাপ খেয়ে নেন।
.
তারপর আমি খাওয়া দাওয়া করে রুমে চলে আসলাম।রুমে সামনে আসতেই
আমার ফোনটা বেজে উঠলো।আমি রুমে আসার পূর্বেই লামিয়া ফোনটা রিসিভ করলো:
.
-- আসসালামু ওয়ালাইকুম।(লামিয়া)
-- ওপাশের কথা শোনা যাচ্ছে না।
-- আছে।তবে আপনি কে?
-- ওপাশের কথা শোনা যাচ্ছে না।
-- ওহ তুমি?
-- ওপাশের কথা শোনা যাচ্ছে না।
-- আমি লামিয়া।
-- ওপাশের কথা শোনা যাচ্ছে না।
-- ভালো।
.
এমন সময় আমি রুমের ভিতর ঢুকলাম।রুমের ভিতর ঢুকতেই লামিয়া
আমার হাতে ফোনটা দিয়ে বললো:
.
-- নাও কথা বলো।
-- কে ফোন করেছে?
-- কথা বললেই বুঝতে পারবে।
.
লামিয়া আমার হাতে ফোনটা দিয়ে অন্য রকম একটা মুড নিয়ে বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লো।আমি রুম থেকে বেরিয়ে বারান্দায় চলে আসলাম।
.
-- হ্যালো কে বলছেন?
-- শাকিল আমি বৃষ্টি।
-- ওহ তুমি।
-- হুম।কেমন আছো?
-- ভালো।তুমি কেমন আছো।
-- আমিও ভালো আছি।
-- কি করো এখন।
-- আমি শুয়ে আছি।
তুমি কি করো?
.
এরকম আরো কিছু সময় কথা বলার পর আমি রু্মে চলে আসলাম।রুমে এসে লামিয়ার দিকে লক্ষ করলাম ওর দুচোখ দিয়ে অশ্রু ঝরছে।আমাকে দেখেই লামিয়া ওর দু চোখের পানি মুছে ফেললো।আমি সোজা বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম।এভাবেই কাটতে থাকলো সময়।পেরিয়ে যেতে থাকলো দিনের পর দিন।কয়েকদিন পর > ছাদের উপর গিয়ে একটা সিগারেট ধরালাম।সিগারেটটা ধরিয়ে আপন মনে টানতে শুরু করলাম।নিজের কষ্টগুলোকে সিগারেটের ধোয়ার সাথে উঠিয়ে দিচ্ছি।আর দূরের ওই নীল আকাশটার দিকে তাকিয়ে আছি।এমন সময় লামিয়া ছাদে চলে আসলো।লামিয়া ছাদে এসে আমার সামনে দাড়িয়ে বললো:
.
-- তুমি আবার সিগারেট খাচ্ছো।
-- হুম।তাতে তোমার কি?
-- আমার কি মানে?তোমাকে না
বলেছি তুমি সিগারেট খাবে না।
-- তুমি আমার কে যে আমি
তোমার কথা শুনবো।
-- আমি তোমার বিয়ে করা বউ।
-- আর তুমি আমার স্বামী।
-- হুম স্বামী।
-- আরে আমি তো একজন ধর্ষক।
-- আর ধর্ষক কখনো কারো স্বামী
হতে পারে না।
.
হ্যাঁ আমি তো একজন ধর্ষক আর ধর্ষকের কখনো কারো স্বামী হওয়ার কোন
অধিকার নেই।ধর্ষকরা হলো সমাজের সবচেয়ে নৃকৃষ্ট ব্যাক্তি।যাদের কেউই পছন্দ করে না।কথাটা বলেই আমি ছাদ থেকে রুমে চলে আসলাম।
.
.
.
.
.
.
.
#_______চলবে_______
ধর্ষক থেকে বর
.
#____পর্ব__১৬____
হ্যাঁ আমি তো একজন ধর্ষক আর ধর্ষকের কখনো কারো স্বামী হওয়ার কোন অধিকার নেই।ধর্ষকরা হলো সমাজের সবচেয়ে নৃকৃষ্ট ব্যাক্তি।যাদের কেউই পছন্দ করে না।আমি ছাদ থেকে রুমে চলে আসলাম।রুমে এসে বাইকটা নিয়ে চললাম বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেওয়ার উদ্দেশ্য।আমি বাইকটা টং চায়ের দোকানের সামনে দাঁড় করালাম।চায়ের দোকানে কিছু সময় বসে থাকার পর আমার সব বন্ধুরা সেখানে চলে আসলো।আমি বন্ধুদের সাথে চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিচ্ছি।এমন সময় আমার এক বন্ধু বললো:
.
-- কিরে বিয়ে করে আর বাসা থেকে
বের হতেই চাস না।(রিফাত)
-- বাসায় সুন্দরী বউ রেখে বাহিরে বের
হতে মন চায় না।তাই না।
-- না রে দোস্ত।আসলে তেমন সময়ই
হয়ে ওঠে না।
-- থাক আমাদের কে আর মিথ্যা
কথা বলার কোন প্রয়োজন নেই।
-- আচ্ছা।এখন বাদ দে তো এইসব।
-- না না মাম্মা ওইটা বললে
তো হবে না।
-- নতুন বিয়ে করলে আমাদের
ট্রিট কই?
-- এখন তোদের সকলকে ট্রিট
দিতে হবে।
-- হ্যা দিতে হবে।চল।
-- কোথায়?
-- কোথায় মানে রেস্তুরেন্সে।
-- এখন আমার কাছে তো
এতো টাকা হবে না।
-- সেটা বললে তো শুনবো না।
.
ওরা আমাকে এক প্রকার জোর করেই রেস্তুরেন্সে নিয়ে গেল।একেকটা কিভাবে খাচ্ছে দেখেন।হারামজাদা রা মনে হয় আমাকে ফকির করে চাড়বে।যখন যার যা লাগছে সব কিছুই একসাথে অডার দিচ্ছে।খাওয়া দাওয়া শেষে ওয়েটার এসে বিলের স্লিপটা হাতে ধরিয়ে দিল।হায় আল্লাহ টানা দশ হাজার দশ টাকা বিল করে ফেলছে।হালারা তো আমার বারটা বাজিয়ে ছেড়েছে।এখন আর কি করার টাকাগুলো দিয়ে সেখান থেকে বাসায় চলে আসলাম।বাসায় এসে কলিং বেল বাজানোর কিছু সময় পর ফ্লোরের দরজা খুলে দেওয়া হলো।দরজাটা খুলতেই আমি অবাক হয়ে গেলাম।দরজার সামনে দেখি মেঘলা দাড়িয়ে আছে।
.
-- আরে মেঘলা তুমি কখন
আসলে।(আমি)
-- এই তো একটু আগে।
-- বাসার সবাই কেমন আছে।
-- সবাই ভালো আছে।
-- এখানেই দাড়িয়ে কথা বলবেন
নাকি ভেতরে আসবেন।
.
আমি সেখান থেকে ভেতরে চলে আসলাম।আমার শালিকাটা তো হেব্বি দেখতে।আগে জানলে লামিয়ারে না মেঘলারে বিয়ে করে নিয়ে আসতাম।তবে একদিক থেকে ভালই হয়েছে।এক সাথে দুই বউ পেয়েছি।একটার সাথে আরেকটা ফ্রি।বউয়ের ছোট বোন মানে শালিকা তো বউয়ের মতোই তাই না।
রুমে এসে বসার কিছু সময় পরই আম্মু আমাকে ডাক দিল।কাছে আসতেই আম্মু একটা ব্যাগ হাতে ধরিয়ে দিল।
.
-- শাকিল শোন।(আম্মু)
-- জ্বি আম্মু বলো?
-- এই টাকাগুলো ধর।
-- আমার হাত খরচ দিচ্ছো বুঝি।
-- তোর হাত খরচ তো আগেই দিয়ে
দিয়েছি।
-- তাহলে এখন টাকা দিচ্ছো কেন?
-- মেঘলা আসছে।টাকাগুলো দিয়ে
বাজার করে নিয়ে আয়।
আমি রুম থেকে বেরিয়ে রাস্তায় আসলাম।রাস্তায় এসে একটা রিক্সা নিয়ে বাজারে চলে গেলাম।একেকটা জিনিসের কি দাম রে বাবা।দামের কারণে জিনিসগুলোর সামনে যেতেই ইচ্ছে করে না।বাজার করতে করতে বিকাল
হয়ে গেল।বাজার থেকে একটু ফাঁকে এসে রিক্সা নিয়ে বাসায় চলে আসলাম।
রাতে খাওয়া দাওয়া করে রুমে এসে বসে বসে ল্যাপ্টপ চালাইতেছি।এমন সময় লামিয়া রুমে আসলো।রুমে আসার পর লামিয়া বললো:
.
-- ঘুমাবে কখন তুমি?(লামিয়া)
-- তুমি ঘুমিয়ে পড়ো।আমি একটু
পর ঘুমাবো।
-- মেঘলা কালকে ওর সাথে আমাদের
যেতে বলছে।
-- তুমি যাও আমি যাব না।
-- তুমি কেন যাবে না?
-- এমনিতেই।
-- তোমাকেও আমার সাথে যেতে হবে।
-- আমি বললাম না যাব না।
-- তুমি না গেলে আমি কখনো আর
এই বাড়িতে ফিরে আসবো না।
(কান্না জরিত কন্ঠে বললো লামিয়া)
-- ওকে আমি যাবো।এবার happy?
-- হুম।
-- আচ্ছা এখন ঘুমিয়ে পড়ো।
.
তারপর লামিয়া ঘুমিয়ে পড়লো।তার কিছু সময় পর আমিও বিছানায় গিয়ে শুয়ে পড়লাম।আল্লাহ রে আল্লাহ এইটা মেয়ে না অন্য কিছু।আস্ত একটা ডাইনি।আমার জীবনটার একদম তেরটা বাজিয়ে ছেড়েছে।সকালে কারো
উচ্চ শব্দের কারণে ঘুমটা ভেঙে গেল।ঘুম থেকে উঠে বিছানার
সামনে তাকিয়ে দেখি..........
.
.
.
.
.
.
#_______চলবে_______
0 মন্তব্যসমূহ
গল্প গুলো কেমন লাগলো, আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করুন।