গল্প : পর্দাওয়ালী বউ (জান্নাতি নূর)



গল্প :- পর্দাওয়ালী বউ(জান্নাতি নূর)😍😍

full story- (جيم)
#মাদ্রাসার একটা মেয়ের সাথে ধরে বেধে আমার বিয়ে দিয়ে দিলো।
যেখানে আমি রংপুর কারমাইকেল কলেজের ইংলিশ ডিপার্টমেন্টের একজন হ্যান্ডসাম ডেসিং স্টুডেন্ট😜😉 ।
এটা কি মেনে নেওয়া যায়। 😂🤭
আমার কত আশা ছিলো আমার বউ হবে খুব মর্ডান একটা মেয়ে।
যে সব সময় মর্ডান ড্রেস পড়ে সেজেগুজে থাকবে। যাকে নিয়ে ফটো তুলবো আর ফেসবুকে পাবলিক পোস্টে দেবো।
সবাই দেখবে তখন এই #জাহিদের বউ কতটা বিউটিফুল।
সবাই সুন্দর সুন্দর কমেন্ট করবে আমার বউয়ের।
ওর রুপের প্রশংসা করবে।
কিন্তু এখন তো আমার সব আশায় জল ঢেলে দিলো এই মাদ্রাসার মেয়েটা।
পুরো বডি বোরখা দিয়ে ঢাকা থাকবে পা থেকে মাথা পর্যন্ত। কিছুই দেখা যাবেনা। 😱
ভাবতেই আমার রাগে মাথায় আগুন জ্বলছে।🤒
.
.
আমাকে এক প্রকার জোর করে বাবা মেয়ে দেখাতে নিয়ে গেলো রংপুরের পীরগঞ্জে ।
.
ভাবলাম যাইহোক, মেয়ে কে অন্তত বিয়ের আগে দেখতে পারব।
সুন্দরী হলে ভাবা যাবে বিয়ের বিষয়টা।
বিয়ে হলে আমার কথায় চলতে হবে বউকে কারণ আমি হলাম তার স্বামী।
আমি তাকে আমার মতো মর্ডান বানিয়ে দেবো।
আমার কথায় সে চলবে।
স্বামী আদেশ শুনবে এটাই তো মেয়েটার সাত কপালের ভাগ্য।
পছন্দ না হলে আমি অযুহাত দেখাতে পারব বিয়ে না করার।
.🤭
.
আমি মেয়ে দেখে সেন্স হারাবো
এমন অবস্থা হয়েছে।
মেয়ের পা থেকে মাথা অব্দি পর্দা করা।
কালো বোরখা পড়েছে ঢিলেঢালা।
বডি স্লিম নাকি ফ্যাট সেটাও বোঝা যাচ্ছেনা।
চোখ পর্যন্ত কালো নেট দিয়ে ঢাকা নেকাবের সাথে।
আমার প্রচন্ড রাগ উঠে গেলো।
একটু ফেসও দেখতে পারলাম না।
আমি উঠে যেতে চাইলে বাবা রাগী লুকে তাকালো আমার দিকে।
আমি ধপ করে বসে পড়লাম।
.
.
মেয়ে ফিস ফিস করে কিজানি বলল।
মনে হয় সালাম দিলো।
পুরো বাড়িটাতে কোন মহিলা দেখালাম না।
মনে হয় বাড়ির সবাই পর্দানশীল নারী, পর পুরুষের সামনে আসে না 😂
সারা বাড়ি স্তব্ধ।
মেয়ের বাবা হাতে করে সব নাশতা আনলেন।
আমি বললাম মেয়েকে বললাম...নাম কি?
____
মেয়ে মাথা নিচু করে আছে।
মেয়ের বাবা কাশতে শুরু করলেন।
বাবা রাগী লুকে তাকালেন।
শুধু নাম জিজ্ঞেস করাতে এমন রিয়াকশন।
.
আমি সমুচা খেতে খেতে এদিক ওদিক তাকালাম শালিদের দেখার জন্য।
কিন্তু কোথাও কেউ নেই।সোনায় বাঁধানো কপাল আমার একটা শালিও নেই আর থাকলেও দেখার সৌভাগ্য হতো না আমার।
আহত চোখে মেয়ের চলে যাওয়া দেখে হলো।
.
.
তারপর সাহস জমা করে বললাম...আমি মেয়ের সাথে আলাদা কথা বলতে চাই।✌🏻
অমনি মেয়ের বাবার হার্ট অ্যাটাক এর মতো অবস্থা হলো।
আর বাসার ভেতর থেকে সম্ভবত মেয়ের মায়ের হাত থেকে কিছু কাচের জিনিসপত্র ভাঙার শব্দ এলো।
সিচুয়েশন আমার প্রতিকূলে।
চারদিকের সিচুয়েশন স্তব্ধ।
বাবা আমার দিকে এমন লুকে তাকিয়ে আছেন যে মনে হচ্ছে আমাকে গিলে খাবেন রেজালা ভেবে কাবাবের মতো।
.
তারপর হঠাৎ কি মনে করে যেনো বাবা উঠে পড়লেন।
আর আমাকে নিয়ে চলে এলেন।
বুঝতে পাচ্ছিনা বিয়ে আধ হবে কি হবেনা।
.
.
পরেরদিন বাবার ডাকে দেখা করতে গেলাম বাবা মায়ের রুমে।
বাবার মুখ গম্ভীর।
বাবা বলল... দেখ জাহিদ বিয়ে হলো আল্লাহ তায়ালার হাতে।
এখন বিয়ে না হলেও একসময় তো বিয়ে হবেই।
আমি তো সেই লেভেলের খুশি।
.
বাবার কথা শুনে মনে হচ্ছে বিয়ে ভেঙেছে।
ইচ্ছে হচ্ছে এখনি সালমান খানের একটা গানে ডান্স দিই।
.
কষ্ট পেয়েছি এমন লুক নিয়ে বললাম...বাবা দুঃখ পেয়োনা।
😱😱
এর থেকেও ভালো বৌমা এনে দেবো তোমাদের জন্য।
বিয়ে তো তোমার আমার হাতে নেই।
.
.
বাবা আমার মাথায় হাত রেখে এরপর যা বলল তাতে আমি স্তব্ধ।
বিয়ে হচ্ছে এই সপ্তাহে।
আর সেটা ঘরোয়া ভাবে হবে কারণ মেয়ের ইচ্ছে।
.
মাই গড আমার পক্ষে এই বিয়ে করা অসম্ভব।
মাদ্রাসার পর্দা করা মেয়েকে বিয়ে করার চেয়ে বস্তির মেয়ে বিয়ে করাও ভালো।
আমি বাড়ি থেকে পালাতেও পারলাম না।
বাবা সাফ সাফ বলে দিলো আমি বিয়ে না করলে সব প্রোপার্টি চলে যাবে এতিমখানার মাদ্রাসায়।
যথারীতি বিয়ে হলো সাদা মাটা।
কোন গান বাজনা, আতসবাজি কিছুই হয়নি।
এরকম নিরামিষ বিয়েতে আর যাইহোক কোন ফ্রেন্ডদের ইনভাইট করা যায়না।
মেয়ের ইচ্ছে অনুযায়ী বিয়ের সব উৎসব এর টাকা মাদ্রাসায় দিয়ে দেওয়া হলো এতিমদের।
বিয়েতে বিশিষ্ট অতিথিরা হলো মাদ্রাসার ছেলেরা।
যেখানেই যায় শুধু মাদ্রাসা আর মাদ্রাসা।
শালী তো একটাও দেখলাম না মাঝখান থেকে চার বছরের শালা পাজামা পাঞ্জাবি পড়ে এসে আমাকে বলল...দুলাভাই আমাকে বাতাসা জিলিপি দিন। 😖
দিলাম এক ধমক।
একই অস্বস্তি পরিবেশ তার উপর এই ছেলে বলে কিনা দুলাভাই জিলিপি বাতাসা।
আমি কি মসজিদর ইমাম যে জিলিপি বাতাসা নিয়ে বসে আছি বিলি করার জন্য।
টুকটুকে সুন্দর আমার শ্যালকটা ধমক খেয়ে মুখ ব্যাকা করে কাদঁতে বসে পড়লো ফ্লোরে।
বসলে বসুক তাতে আমার কি।
.
.
.
আমি রুমে গেলাম মাঝরাতে। বউয়ের মুখটাও দেখিনি এখনো।
বিয়ের সময়ও পর্দা করে ছিলো।
এতোকিছু যাকে নিয়ে হচ্ছে তার নামটাও জানিনা।
আমি গিয়ে বিছানায় বসলাম।
দেখলাম মেয়েটার গায়ে শাড়ি।
কোন বোরখা দিয়ে পর্দা করা নয়।
চিৎকার করে বলললাম... বাসর ঘরেও পর্দা করে রাখতে।😠
এনে দেবো বোরখা।
মেয়েটা ধপ করে উঠে বসলো।
মেয়ের মুখে ঘোমটা দেওয়া।
এটা দেখে আরও রাগ উঠলো।
রাগ দেখিয়ে বললাম নাম কি?
এখন তো আর আমার সাথে কথা বললে আর মুখ দেখালে আল্লাহ তোমার মুখে গায়ে আগুনের ফোসকা দেবে না ।
মেয়ে ঘোমটা খুলতেই
মেয়ের মুখ দেখে আমি জ্ঞান হারালাম।
_আমি আয়েশা জান্নাত রুহি...আপনার কি হয়েছে।
আসুন আমার কোলে মাথা রাখুন আমি হাত বুলিয়ে দিচ্ছি।
সারাদিন বিয়ের ধকল গেলো আপনার উপর।
নিন আগে দুধ টুকু খেয়ে নিন।
তারপর আমার কোলে ঘুমুবেন।
.
.
আমার চোখ বড় বড় হয়ে ছিলো ফেস দেখে তারপর কথা শুনে আমার চোখ বের হতে শুরু করেছে এমন অবস্থা।
বউয়ের কোলে মাথা রেখে বউয়ের হাতে দুধ খেলাম। 😜
(পজিটিভ)
আহা! দুধ সেকি শুধু দুধ।
মনে হচ্ছে অমৃত খাচ্ছি।
কি সুন্দর মুখখানা।
নূরের আলো জ্বল জ্বল করছে মুখে চোখে।
যেনো বেহেশতের হুর পাঠিয়েছে আমার ঘরে আল্লাহ তায়ালা।
কি সুরেলা কন্ঠ।
কন্ঠ শুনেই আমি তো সারাজীবন পার করে দিতে পারব।
এমন জান্নাতি হুর জীবনেও দেখিনি আমার জীবনে।
.
.
আমি কাঁপা কাঁপা কন্ঠে কাঁদো কাঁদো লুক নিয়ে বললাম তুমি কি বেহেশতের হুর।
পথ ভুলে ভুল করে চলে এসোছো।
আবার কি আসমানে চলে যাবে আল্লাহর বেহেশতের বাগানে।
আমার হুর বউ তরু অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে সুরেলা কন্ঠে হাসতে শুরু করলো।
এবার আমি পুরো পুরি জ্ঞান হারালাম।
.
রাতে ঘুম ভালো ঘুম হলো।
মায়ের সাথে যেমন ছোট বেলায় ঘুমুতে গেলে শান্তির ঘুম হয় ঠিক তেমন ঘুম হলো।
মনে হলো সারারাত আমার সদ্য বিয়ে করা বউ রুহি তার সব সুখ শান্তি আমাকে উজার করে দিচ্ছে।
রুহির গায়ের মিষ্টি গন্ধে আর মাথায় হাত বুলানোর অনুভব আমি টের পাচ্ছি ঘুমে।
.
আমি এখন পাজামা পাঞ্জাবি পড়ি।
মাথায় টুপি দিই।
.
পাচঁ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি।
মর্ডান থেকে আমি আল্লাহর বোরিং বান্দা হয়ে খুশি।
আমি আমার শালাকে কে এখন কোলে করে নিয়ে স্টোরে যায় গরম গরম জিলিপি বাতাসা খাওয়ানোর জন্য প্রতিদিন।
টুক টুক করে শালা জিলিপি খায় আর বলে... দুলাভাই দুলাভাই সালামালিকুম।
.
আমার মাদ্রাসার পর্দা করা বউ রুহি আমার জীবনকে পাল্টে দিয়েছে।
আমার বাবা আর মা আমার এই অবস্থা দেখে খুশিতে কাঁদে।
আমার মনে এখন অফুরন্ত শান্তি।
সবকিছুতেই শান্তি লাগে।
আল্লাহর পথে চললে কখনো দুঃখ অনুভব হয়না এটা বুঝতে পারলাম লেট হলেও।
.
.
আমার চিৎকার করে বলতে ইচ্ছে করে আমার বোরিং ব্যাগটেডেট পর্দাওয়ালী বউ পৃথিবীর সবচেয়ে ভালো বউ।
আর আমি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তরুর কোলে মাথা রাখব।

রুহির মাহাত্ম্য দিন দিন আমি বুঝতে পাচ্ছি যত মূহুর্ত যাচ্ছে তত মূহুর্ত।
রুহিকে ছাড়া আমার কিছুই ভালো লাগেনা।
রুহির জন্যই আমি প্রকৃত মুসলিম হয়েছি।
আমার মালিক রব মহান আল্লাহকে চিনেছি।
আমি সবাইকেই এখন বোঝায় একজন পর্দা করে এমন মেয়েকেই বিয়ে করতে কারণ এরাই ইহকাল আর পরকালের জান্নাতি নূর।
.
ভবিষ‍্যতে এইরকম পর্দাশীল মাদ্রাসার মেয়েকেই বিয়ে করবো ইনশাআল্লাহ ।
আপনারাও তাই আশা করবেন ।
এতে ইহকালেও জিতবেন আর পরকালেও জিতবেন ।
ইনশাআল্লাহ..

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ