গল্প: ঝগড়াটে মেয়ে । পর্ব-১

ঝগড়াটে মেয়ে

গল্প ঝগড়াটে মেয়ে 


পর্ব-১

যদি বউ সাজো গো আরো সুন্দর লাগবে গো।
--ঠাসসসস ঠাসসসস
--বেয়াদব ছেলে রাস্তায় মেয়ে দেখলেই টিজ করতে ইচ্ছে হয় না।(অপরিচিতা)

কানে ইয়ার ফোন লাগিয়ে ফুল ভলিউম দিয়ে গান টা শুনছিলাম আর রাস্তার পাশ দিয়ে মাথা নিচু করে হাটছিলাম আর আস্তে আস্তে গান টা গাচ্ছিলাম। বুঝলাম না মেয়েটা থাপ্পড় মারলো কেনো। আর আমি আবার কখন মেয়েটা কে টিজ করলাম।
--ও হ্যালো আমি আবার আপনাকে কখন টিজ করলাম।(আমি)

--কখন টিজ করলেন মানে।এই মাত্রই তো আমাকে দেখে গান করলেন।(মেয়েটি)
--ও হ্যালো নিজেকে আয়নায় দেখেছেন কখনো???? যেই না মোর চেহেরা নাম রাখছে......... আমার খেয়ে দেয়ে কাজ নাই পেত্নী কে দেখে গান করব না। আমার মাথা এখনো ঠিক আছে বুঝছেন।আমি তো গান শুনছিলাম। (আমি)

--এই আপনি আমকে কি বলেন আমি পেত্নী।ঘুশি মেরে নাক ফাটিয়ে দিব ভুত একটা। আর মিথ্যা কথা ভালোই বলতে পারেন।আমাকে দেখে গান গাচ্ছেন আর এখন বলছেন গান শুনছিলেন মিথ্যুক একটা। (মেয়েটি)
--বিশ্বাস না হলে নিজেই শুনুন।ইয়ার ফোন টা মেয়েটির দিকে এগিয়ে দিলাম।(আমি)

মেয়েটি ইয়ার ফোন কানে লাগিয়ে চুপ হয়ে গেলো। কনো কথা না বলে চলে যেতে লাগল।পিছন থেকে আমি বললাম--
-- এই যে শুনুন থাপ্পড় টা তোলা থাকলো সুজগ পেলে সুদে আসলে দিয়ে দিবো।(আমি)

মেয়েটি আমার দিকে ভেঙচি কেটে চলে গেলো।
এখন মেয়েটা বর্ণনা দেই।মেয়েটি মোটেও পেত্নীর মত না সুন্দর একটা মেয়ে।দেখেই ক্রাশ খাবার মতো।হিজাব পরে ছিলো তাই চুলের বর্ণনা দিতে পারছি না।তবে ভাই চোখ দেখে যে কেউ ক্রাশ খাবে শিয়র। আমিও বাদ পরিনি।ঝগরার মধ্যে ছিলাম তো তাই বলতে পারি নি।তাছাড়া এলাকায় নতুন এসেছি।বাবার বদলীর কারনে এখনে আসা।এখন আমার সর্ম্পকে বলি আমি ।

আমি একজন MBBS। আরে ভাই পড়ার দিক দিয়ে না।মা বাবার বেকার সন্তান। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করে এখন চাকরির জন্য ঘুরছি। কয়েকটা ইন্টার্ভিউ দিয়েছি এখনো কনো খবর পায়নি।তাই সারা দিন গান শুনি আর ঘুরে বেরায়। আমার বাবা একজন সরকারি কর্মকতা।আর মা গৃহিণী।
আর একজন আছে বদের হাড্ডি আমার কলিজার টুকরা একমাত্র বোন।পরিবারে আমি মা কে ভয় পায় বেশি আর বাবা তো আমার বন্ধুর মত। সব কথা শেয়ার করি।এই নিয়েই আমাদের সুখের সংসার।অনেক পরিচয় দিলাম এবার গল্পে আসি।

যেখানে যাচ্ছিলাম সেখানে না গিয়ে বাসায় ফিরে যায়।আজ দিন টায় খারাপ যাচ্ছে।বোনের সাথে ঝগরা করে বাসা থেকে বের হয়ছি আর এখন রাস্তায় ঝগরা করলাম।কার মুখ দেখে যে উঠছি আজ। না আজ আমি নিজের মুখ দেখেই উঠছি তাহলে এমন যাচ্ছে কেন।আপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে বাসায় আসলাম।কলিং বেল বাজালা--
--কে???(মা)
--মা আমি দরজা খুলো।(আমি)

--তোর বাড়িতে জায়গা নাই।তুই বাহিরেই থাক।(বোন)
--ঐ পুচকি তোরে কিন্তু আমি মাইরা ফেলামু।তারাতারি দরজা খোল।(আমি)
--হা হা হা হা ফেলা দেখি কত পারিস।আছিস তো বাড়ির বাহিরে।(বোন)

--মা দরজা খুলতে বলো ওকে না হলে কিন্তু ভালো হবে না।(আমি)
--খুলতে পারি এক শর্তে?? (বোন)
--কি শর্ত শুনি। (আমি)
--আমাকে ৫০ টাকা দিতে হবে তাহলে খুলবো না দিলে খুলবো না।(বোন)
--আচ্ছা দিবো খোল এখন।(আমি)
--উঁহু হবে না।দরজার নিচ দিয়ে টাকা আগে দে তারপর খুলবো। (বোন)

কি আর করার কাদাতে পরলে চামচিকাতেও লাথি মারে।একে টাকে ভিতরে ঢুকে দিলাম।ও টাকা নিয়ে দরজা খুলে দিয়ে দৌড়ে ওর রুমে চলে গেলো। আমি আমার রুমে চলে আসলাম।রুমে বসে ফেসবুকে গল্প পরছি।গল্প পরতে আমার খুব ভালো লাগে আর মাঝে মাঝে ২-১ গল্প লিখি আর কি।পরছিলাম তখনি তাজমিনা(আমার বোনের নাম)এসে বলল--
--ভাইয়া আম্মু তোকে ডাকছে।(তাজমিনা)
--আচ্ছা যা আসছি আমি।(আমি)

--না এখনি ডাকছে তারাতারি আয়।(তাজমিনা)
রুম থেকে বাহিরে গেলাম ড্রইং রুমের দিকে।বাড়িতে মনে হয় কে যেনো আসছে।মাথা নিচু করেই গেলাম।
--মা আমাকে ডাকছো??(আমি)
--হুম এই তোর আন্টি পাশের বাড়িতে থাকে।(মা)
--আসসালামু আলাইকুম আন্টি। কেমন আছেন??(আমি)

--ওলাইকুম আসসালাম। ভালো আছি বাবা তুমি কেমন আছো? (আন্টি)
--জি আন্টি ভালো আছি।তখনো মাথা নিচু করে ছিলাম (আমি)
--দেখ দেখে কিছু শেখ।বড় দের কি ভাবে সন্মান করতে হয় দেখে শেখ।(আন্টি)
কাকে দেখি শিখতে বলছে আন্টি মাথা টা তুলেই আমি পুরা ৪২০ ভোল্ট ঝাটকা খায়লাম।
আরে এ তো পেত্নী টা। আমার দিকে এভাবে তাকিয়ে আছে কেনো। আমি আবার কি করলাম।মনে হচ্ছে গিলে খাবে।

--আ__আ__আপনি আমার দিকে এভাবে তাকাচ্ছেন কেনো??? আমার ভয় করছে।(আমি)
--এই মুন হচ্ছে টা কি।কি করছিস ছেলে টা কে??(আন্টি)
(বাহহ নাম টা ভালোই মুন।চেহারার সাথে মিল আছে বটে।)

--আমি আবার কি করলাম আম্মু।(মুন)
--কি করলি মানে।এই ভাবে ওর দিকে তাকাচ্ছিস কেন???(আন্টি)
--কই কি ভাবে তাকাচ্ছি।দুর ভাল লাগে না।আমি গেলাম।(মুন)
বলে রাগ করে চলে গেলো মুন।তারপর আন্টির সাথে কিছুক্ষন কথা বলে আমি রুমে চলে আসলাম।বসে বসে গেমস খেলছিলাম তখনি তাজমিনা আসলো --
--এই ভাইয়া ফোন দে।(তাজমিনা)
--কেনো???(আমি)

--গেমস খেলবো দে।(তাজমিনা)
-
-দিবো না যা ভাগ।(আমি)
--দে বলছি না হলে কিন্তু খুব খারাপ হয়ে যাবে।(তাজমিনা)
--কি খারাপ হবে শুনি।(আমি)
--দারা দেখাচ্ছি।
বলে হাত থেকে ফোন টা নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে গেলো।
--তাজমিনা ফোন দে।না হলে কিন্তু ভালো হবে না।(আমি)
--.........
--তাজমিনা ফোনটা বলছি।(আমি)
--দিব যা ভাগ এখন আমি গেমস খেলবো। আর এখন যদি ডিস্টার্ব দিস তাহলে আরও দেরি করব।(তাজমিনা)
--লক্ষি বোন আমার দে ফোনটা।(আমি)
--বলছি না দিবো না তো দিবো না।(তাজমিনা)
--তুই এত্য প্যারা দিস কেন বলতো।(আমি)
--কি আমি প্যারা দেই যা তুই আজ ফোনই পাবি না।(তাজমিনা)
--এই না না প্লিজ লক্ষি বোন এমন করিস না।প্লিজ ফোনটা দে।(আমি)

--না দিব না।বলে রুমে গিয়ে দরজা লক করে দিলো।
দুর এর জন্য শান্তি তে একটু ফোনটাও চালাতে পারব না।ফোনা থাকলে কি ভালো লাগে।দুর ছাই বাড়িতেই থাকব না।বাড়ি থেকে বের হয়ে চলে আসলাম।মাথা নিচু করে হাটছিলাম এমন সময় কে যেনো পিছন থেকে ডাকলো --
--এই যে মিস্টার এই দিকে শুন।(মুন)
--জি আমাকে বলছেন???(আমি)

--এই খানে তো আর কাউ কে দেখছি না।আপনি কাউ কে দেখছেন???(মুন)
--না তো।(আমি)
--তাহলে আপনাকেই ডাকছি।এই দিকে শুনুন।(মুন)
--জি বলুন।(আমি)
--বাড়িতে এত্য ভদ্র হয়ে থাকেন কেনো হুম।আপনার জন্য আমাকে বকা খাইতে হলো।(মুন)
--আমি আবার কি করলাম।(আমি)
--কি করলেন মানে আপনার জন্য আমাকে আম্মু বকা দিছে।(মুন)

--এই শুনেন বেশি কথা বললে আন্টি কে বলে দিবো যে আপনক আমাকে থাপ্পড় মারছিলেন হুম।(আমি)
--আ__আ__আ_মি তো ইচ্ছে করে মারিনি।ভুলে মেরেছি।(মুন)
-- ভুলে মারেন আর যেনেই মারেন মাছেন তো।আমি তো আন্টি কে বলেই দিব।(আমি)
--এখনে আম্মু কে বলার কি আছে আমরাই তো ঝামেলা মেটাতে পারি।(মুন)
--না তা বললে তো হবে না।আমি তো আন্টি কে বলেই দিবো। (আমি)

--হুম জান জান বলেন।তারপর দেখেন কি হাল করি আপনার।(আমি)
--ভয় দেখচ্ছেন?(আমি)
--ধরতে গেলে তাই।(মুন)
--কিন্তু আমি ভয় পাচ্ছি না।(আমি)
--হুম জান জান বলেন।দেরি করছেন কেনো এখনি যায়ে বলেন।(মুন)

--হুম ঠিক আছে আমি গেলাম আপনাদের বাসায়।
বলে ওদের বাসার দিকে গেলাম গিয়ে কলিং বেল বাজালাম.....

#চলবে

(বিঃদ্রঃ ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন।)

গল্প গুলো ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট এবং শেয়ার করবেন ।

ঝগড়াটে মেয়ে পর্ব ২


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ